বিরোধীদের চাপের মুখে দাঁড়িয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটিকে শেষ পর্যন্ত সংসদের যৌথ সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এর ফলে বিলটি দ্রত অনুমোদনের সম্ভাবনা পিছিয়ে গেল আগামী শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত। ঠিক হয়েছে, শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনের মধ্যে সিলেক্ট কমিটি তাদের রিপোর্ট সংসদে পেশ করবে। তারপরেই আসবে তা অনুমোদনের বিষয়টি।
আজ লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব মিটতে না মিটতেই বিজু জনতা দলের সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাব উঠে দাঁড়ান। তিনি নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, নাগরিকত্ব বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে বিলটি ভাল করে পর্যালোচনা করা জরুরি। তাঁর বক্তব্য, স্মরণাতীত কাল থেকে ভারত সব সময়েই বিভিন্ন ধর্মের শরণার্থীদের দু’হাত প্রসারিত করে গ্রহণ করেছে। আমরা তার বিরোধিতা করছি না। কিন্তু বিলটিকে আরও পর্যালোচনা করা জরুরি। সে কারণেই সংসদের যৌথ সিলেক্ট কমিটি গঠন করে বিলটিকে তাদের কাছে পাঠানো হোক। কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়ার পরামর্শও তিনি দেন।
ভর্তৃহরির দাবিকে এক বাক্যে সমর্থন করেন কংগ্রেসের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। বিরোধীরা সবাই এই বিলটিকে সমর্থন করবে। কিন্তু তার আগে সিলেক্ট কমিটি বিলটিকে খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করুক।’’ বিরোধীদের দাবি শোনার পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘সব দলের বক্তব্য যদি এটাই হয়, তবে সরকার এ ব্যাপারে কোনও আপত্তি করবে না। সরকতার সিলেক্ট কমিটি গঠন করবে।’’
বিলটিতে বলা হয়েছে: প্রতিবেশী পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষ অর্থাৎ হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও পার্সিদের ভারত শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেবে, তাঁদের অনুপ্রবেশকারী বলা হবে না। তাদের নাগরিকত্বও দেওয়া হবে। তারা সাত বছর ভারতে থাকলেই নাগরিকত্ব পাবেন। এই বিলের সঙ্গে মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা অসম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে রয়েছে।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল সংক্রান্ত যৌথ সিলেক্ট কমিটিতে বিভিন্ন দলের মোট ৩০ জন সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে লোকসভার ২০ জন সাংসদ, যাঁদের সিলেক্ট কমিটির অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে তাঁরা হলেন: সত্যপাল সিংহ, কামাখ্যা প্রসাদ তাসা, মীণাক্ষি লেখি, কিরিট সোলাঙ্কি, রমেন ডেকা ও
বীরেন্দ্র কুমার (বিজেপি) আনন্দরাও আদসুল (শিব সেনা), সুস্মিতা দেব ও অধীর রঞ্জন চৌধুরী (কংগ্রেস), ভর্তৃহরি মহতাব (বিজেডি), মহম্মদ সেলিম (সিপিএম), সৌগত রায় (তৃণমূল কংগ্রেস) ও বি বিনোদ কুমার (টিআরএস)। সিলেক্ট কমিটি গঠন করে একটি প্রস্তাবও রাজনাথ সিংহ লোকসভায় পেশ করেন। সেখানে রাজ্যসভাকে কমিটির জন্য ১০ সদস্যের নাম পাঠানোর অনুরোধও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy