বাঁ দিক থেকে, অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং ডান দিকে, গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন। —ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি অরবিন্দ কেজরীওয়াল বিজেপির জন্য আরও বড় বিপদ হয়ে উঠে এসেছেন— এই মর্মে বিশেষ প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিল আম আদমি পার্টি (আপ)। তবে আপ নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন খলিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস-এর নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন। তাঁর দাবি, নব্বইয়ের দশকে ধৃত এক খলিস্তানি জঙ্গিকে দিল্লি জেল থেকে ছাড়ার শর্তে ২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আট বছরে একশো কোটি টাকা অর্থ সাহায্য করা হয়েছে আপ নেতৃত্বকে।
গ্রেফতার হওয়া কেজরীওয়ালকে সামনে রেখে আসন্ন লোকসভার প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। আজ রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেন আপ নেতৃত্ব। দল মনে করে, বিজেপির কাছে জেলবন্দি কেজরীওয়াল অনেক বেশি বিপদের। কেজরীওয়ালের বন্দিত্বকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে আপের পক্ষে সহানুভূতির ঝড় উঠবে ভোটের বাক্সে। সেই লক্ষ্যে দিল্লিবাসীকে বার্তা দিতে আপের পক্ষ থেকে দলীয় সমস্ত নেতা-কর্মীকে সমাজমাধ্যমে তাঁদের অ্যাকাউন্টে নিজের ছবি বদলে জেলে বন্দি কেজরীওয়ালের ছবি দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে মোদীর সব চেয়ে বড় ভয় কেজরীওয়াল— এই মর্মে প্রচার চালাতে নির্দেশ দিয়েছে দল।
বন্দি কেজরীওয়ালকে সামনে রেখে আক্রমণ শানিয়ে বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছেন বিরোধীরা। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, “কেজরীওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইন্ডিয়া জোট রামলীলা ময়দানে জনসভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেজরীওয়ালকে ভয় পাচ্ছেন। জেলে বন্দি হওয়ার পরে কেজরীওয়াল আরও বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছেন। তিনি এখন জেল থেকেই কাজ করবেন। তাতে অনেক বেশি লোক কেজরীওয়ালের কথা শুনবেন এবং তাঁকে সমর্থন করবেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে যে সব নেতা জেলে গিয়েছিলেন, তাঁরা অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে বেরিয়েছেন।”
অন্য দিকে, কেজরীওয়ালকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে শিখস ফর জাস্টিস। সংস্থার প্রধান গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন একটি ভিডিয়ো বার্তায় দবি করেছেন যে, কেজরীওয়ালকে তাঁরা আট বছরে মোট একশো কোটি টাকা অর্থ সাহায্য করেছেন। পন্নুনের দাবি, বিনিময়ে ১৯৯৩ সালে দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবেন্দ্র পাল সিংহ ভুল্লারকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিল্লি সরকার। যদিও আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, পন্নুন মিথ্যা বলছেন। তাঁদের দাবি, আপ দেশবিরোধী কাজ করে না। তবে পন্নুনের অভিযোগ সামনে আসতেই বিজেপি পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে। আগে দিল্লি এবং পরে পঞ্জাবের সরকার খলিস্তানপন্থীদের সাহায্য করে আসছে বলে বিজেপি অনেক দিন ধরেই সরব। তারা বলছে, সেটাই পন্নুনের অভিযোগ থেকে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
হেফাজতে থাকা কেজরীওয়ালকে জেরা করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দাবি করেছে, প্রমাণ লোপাট করতে আবগারি দুর্নীতিতে ব্যবহার হওয়া ফোনটি নষ্ট করে দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের দাবি, দু’বছর আগে আবগারি নীতি প্রণয়নের সময়ে যে ফোন ব্যবহার করেছিলেন কেজরীওয়াল, তা নিখোঁজ। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। ইডির দাবি, আবগারি দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটে সব মিলিয়ে প্রায় ১৭০টি ফোন লোপাট করা হয়েছে। যদিও ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আপ নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, কেজরীকে ফাঁসাতে বিজেপি যা শিখিয়ে দিচ্ছে, তা-ই বলছে ইডি। আপ নেতা আতিশীর কথায়, “ইডি একটি স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা। তাদের বিজেপির শেখানো ভাষায় কথা বলা উচিত নয়। ইডি-র কিছু বলার থাকলে, তা চার্জশিটে উল্লেখ করে কোর্টে বলুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy