তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার গুরুগ্রাম ঘুরে সেখানে বাংলার পরিযায়ী মানুষের হেনস্থার রিপোর্ট পাঠালেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এর পরে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই দলের অন্যতম দুই সদস্য প্রতিমা মণ্ডল এবং মমতাবালা ঠাকুর জানান, সেখানে পরিস্থিতি ‘অসহনীয় এবং অমানবিক’। বাংলা ভাষায় কথা বললে মাঝরাতে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করছে পুলিশ-প্রশাসন।
প্রতিমার বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের বাসিন্দা হেমন্ত বর্মন কাজের খোঁজে গিয়েছেন গুরুগ্রাম। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। জানিয়েছেন, পুলিশ থানায় গিয়ে জামাকাপড় খুলে তাঁকে প্রমাণ দিতে হয়েছে তাঁর ধর্ম। অল্পবয়সি মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগও আমাদের কানে এসেছে।” তাঁর অভিযোগ, এক জন মহিলাকে এমন থাপ্পড় মারা হয়েছে, তিনি কানে শুনতে পারছেন না।
মমতাবালার বক্তব্য, “বলা হচ্ছে, বাংলায় নয়, গুজরাতিতে কথা বল। তাঁরা বাংলার ভোটার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেন। সেটা শুনেই বলা হচ্ছে, এখান থেকে চলে যা, তোরা বাংলাদেশি।” গুরুগ্রামের সেক্টর ৬২-র নাংলি ওমরপুর এবং সেক্টর ৬৪-র মেধাওয়াস এলাকায় একাধিক বাঙালি শিবিরে ঘুরেছেন এঁরা। বাংলা ভাষাভাষীদের পরিচয়পত্রগুলি যাচাই করে দেখেছেন। জানাচ্ছেন, ৯০ শতাংশ মালদহ কোচবিহারের বাসিন্দা। ১ অগস্টের মধ্যে বস্তি খালি করতে হবে বলে ঘোষণা করে গিয়েছে পুলিশ। প্রতিমার কথায়, “আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সংশ্লিষ্ট নম্বর তাঁদের কাছে রেখে এসেছি। কোনও প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।” তৃণমূল সূত্রের খবর, বিষয়টি হরিয়ানা সরকারের কাছে জোরালো ভাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা করছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
অন্য দিকে, সংসদের মকরদ্বারের সামনে আজ অন্য কংগ্রেস সাংসদদের নিয়ে ধর্না দিয়েছেন দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী এবং অসমের ধুবুড়ির সাংসদ রকিবুল হুসেন। তাঁদের বক্তব্য, ওড়িশা, হরিয়ানা, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি, অসমিয়া এবং বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের অন্যায় হয়রানি, গ্রেফতার এবং আটক রাখারমতো ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে তা বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন তাঁরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)