এনডিএ জোটে উপেন্দ্র কুশওয়াহার অবস্থান নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিহার বিজেপি। গত মাসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সম-সংখ্যক আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত যৌথ ভাবে ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী উপেন্দ্র ক্রমাগত নীতীশকে আক্রমণ করে চলেছেন। পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব এবং প্রাক্তন জেডিইউ নেতা শরদ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। যদিও মুখে উপেন্দ্র বলছেন, “এখনও এনডিএতে আছি।”
এই আক্রমণের মুখে নীতীশ বা তাঁর দল মুখ না খুললেও উপেন্দ্রর দল, রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির পরিষদীয় দলকেই নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছেন। তাঁর দলের দুই বিধায়ককেই দলে টানতে সক্রিয় জেডিইউ নেতারা। ফলে নীতীশ সম্পর্কে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন উপেন্দ্র কুশওয়াহা। এর পরেই নীতীশের হয়ে মাঠে নামেন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। উপেন্দ্রর নাম না করে তিনি টুইট করেন, ‘‘কিছু লোক নীতীশকে আক্রমণ করে শহিদ হতে চাইছেন। তবে তাঁরা সফল হবেন না।’’
সুশীল মোদীর এই বক্তব্যর পর বিহার বিজেপিতে তাঁর, এবং অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরোধী গোষ্ঠী, এ বার উপেন্দ্রর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। দলের রাজ্যসভা সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সি পি ঠাকুর বলেন, “উপেন্দ্র এনডিএ ছাড়লে আমাদের ক্ষতি। সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হবে।” একই কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা বক্সারের সাংসদ অশ্বিনী চৌবে। তিনি বলেন, “এনডিএ অটুট থাকবে। কেউ কোথাও যাবেন না। কোনও মতভেদ থাকলে আলোচনা করে মিটিয়ে নেব।”
উপেন্দ্র এনডিএতে থাকুন, চান বিজেপি রাজ্য সভাপতি নিত্যানন্দ রায়ও। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে নিত্যানন্দবাবু জানান, ২০১৪ সালে দলের পাশে ছিলেন উপেন্দ্র, নীতীশ নয়। আজ তাঁকে জোট ছাড়তে বাধ্য করা ঠিক হবে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তিনি জানাবেন। তবে বিজেপির সুশীল মোদী শিবির মনে করে, উপেন্দ্র কুশওয়াহার কোনও ভোটব্যাঙ্ক নেই। ২০১৪ সালে মোদী ঝড়ের ফল পেয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালের বিধানসভা ভোটে তিনি কার্যত কিছুই করতে পারেননি। তাই তিনি না থাকলেও কোনও প্রভাব পড়বে না।
বিরোধী মহাজোটের তরফে উপেন্দ্রকে পাঁচটি আসনে লড়াই করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, আরএলএসপির বিদ্রোহী সাংসদ অরুণ কুমারের সঙ্গেও উপেন্দ্রর রফা হয়েছে বলে খবর।