Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাঙালিদের চাপে ‘ঠাঁই নাই’ রব ঝাড়খণ্ডে

পর্যটকের ঢল দেখে এমনটাই মনে করছেন ঝাড়খণ্ডের পর্যটন কেন্দ্রের ট্যুরিস্ট গাইডরা। বেতলা বা নেতারহাটই হোক অথবা হাজারিবাগ, ঘাটশিলা বা ম্যাকলাক্সিগঞ্জ—সর্বত্রই বাঙালি পর্যটকদের চাপে ‘ঠাঁই নাই’ পরিস্থিতি।

পত্রাতুর-প্রকৃতি: ঝাড়খণ্ডের পাহাড়-জঙ্গল টানছে বাঙালি পর্যটকদের। —নিজস্ব চিত্র।

পত্রাতুর-প্রকৃতি: ঝাড়খণ্ডের পাহাড়-জঙ্গল টানছে বাঙালি পর্যটকদের। —নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
রাঁচী শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

গুরুঙ্গের গুঁতোতেই বোধহয় এ বার পশ্চিমমুখী পর্যটক!

পর্যটকের ঢল দেখে এমনটাই মনে করছেন ঝাড়খণ্ডের পর্যটন কেন্দ্রের ট্যুরিস্ট গাইডরা। বেতলা বা নেতারহাটই হোক অথবা হাজারিবাগ, ঘাটশিলা বা ম্যাকলাক্সিগঞ্জ—সর্বত্রই বাঙালি পর্যটকদের চাপে ‘ঠাঁই নাই’ পরিস্থিতি। পর্যটন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নভেম্বর থেকেই এই সব এলাকার সরকারি-বেসরকারি হোটেল, অতিথি নিবাসে জায়গা নেই।

ডিসেম্বরের ছুটিতে পরিবারকে নিয়ে ঘাটশিলা যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন কলকাতার বেলেঘাটার এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনিমেষ বসু। তিনি বলেন, ‘‘ঠিক করলাম ঘাটশিলা যাব। কিন্তু সেখানেও হোটেল পাওয়া যাচ্ছে না। অগত্যা জামশেদপুরে থেকে ঘাটশিলা ঘুরব।’’ ঘাটশিলার গৌরিকুঞ্জ উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘ঘাটশিলায় বিভূতিভূষণের ‘গৌরিকুঞ্জ’ যাঁরা দেখতে আসেন তাঁরা একটি খাতায় নিজেদের মন্তব্য ও স্বাক্ষর করেন। দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত সাত হাজারেরও বেশি ‘এন্ট্রি’ হয়েছে।’’ সাধারণ ভাবে পরিবারের একজনই খাতায় লেখেন। সেই হিসেব থেকে ধরে নেওয়া যায় গত দু’মাসে অন্তত হাজার পঁচিশেক পর্যটক ঘাটশিলায় এসেছেন। সেখানকার দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা তাপসবাবুর কথায়, এই পর্যটকের ঢল ঘাটশিলায় বহু দিন দেখা যায়নি।

বেতলা ন্যাশনাল পার্কের এক ট্রাভেল এজেন্ট সোমনাথ দে। তাঁর কথায়, ‘‘বেতলায় থাকার জায়গা অকুলান। আমরা পর্যটকদের বলছি, ২০ কিলোমিটার দূরের ডালটনগঞ্জে থাকুন। সেখান থেকেই বেতলা ঘুরুন।’’ পর্যটকদের এই ভিড় বহুদিন দেখেননি বেতলার গাইড মুস্তাকও। তিনি বলেন, ‘‘এবার মনে হচ্ছে উপরওয়ালা আমাদের ‘ছপ্পর ফাড়কে’ দিচ্ছেন।’’ ম্যাকলাক্সিগঞ্জে পর্যটকদের থাকার জায়গা কম। তাই দেখে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ওখানে একটি ছোট গেস্ট হাউস তৈরি শুরু করেছেন রাঁচীর কয়েকজন যুবক। তাঁদেরই একজন মুকেশ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘কাজ এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু সেই অসমাপ্ত গেস্ট হাউসেই পর্যটকরা থাকতে চাইছেন। ব্যবসা শুরু হতে না হতেই লাভের মুখ দেখা শুরু করলাম।’’

অতিরিক্ত এই পর্যটকদের ঠাঁই জোগাতে পিছিয়ে নেই সরকারি অতিথিশালাগুলিও। ঝাড়খণ্ড পর্যটন দফতরের সচিব রাহুল শর্মার কথায়, ‘‘এ বছর নেতারহাটে পর্যটকের ঢল দেখে আমরা হোটেলের পাশে ২০ টা তাঁবুর ব্যবস্থাও করেছি। তাতেও ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ রব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourists Congestion Jharkhand Darjeeling Unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE