Advertisement
E-Paper

‘দুর্বল’ প্রধানমন্ত্রীর জন্যই মাসুদ বিপর্যয়, তোপ রাহুলের, নেহরুর উপর দায় চাপাল বিজেপি

এটিকে কূটনৈতিক বিপর্যয় বলে সেই দায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের উপরেই চাপিয়েছে কংগ্রেস।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ১৪:৫৭
রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।

রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।

মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করতে চিনের শেষ মুহূর্তের আপত্তিতে দ্বিধাবিভক্ত দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। ‘দুর্বল’ প্রধানমন্ত্রীর কারণেই এই কূটনৈতিক বিপর্যয়—প্রধানমন্ত্রীকে এই ভাষাতেই কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। অন্য দিকে বিজেপির তরফে দলের শীর্ষনেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের পাল্টা, ‘‘জওহরলাল নেহরুর সাহায্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জে নিরাপত্তা পরিষদে জায়গা করে নিয়েছিল চিন। তার ফলই এখন ভুগতে হচ্ছে ভারতকে।’’

এই নিয়ে চারবার। মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করতে ফের চিনের প্রাচীরে ধাক্কা খেল ভারত। আর তাই নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে উঠল দেশের রাজনীতি। শুরুতেই এটিকে কূটনৈতিক বিপর্যয় বলে সেই দায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের উপরেই চাপিয়েছে কংগ্রেস। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগে থেকেই কুখ্যাত জইশ জঙ্গি মাসুদ আজহারকে নিয়ে আসরে নেমেছিল তারা। ১৯৯৯ সালে কন্দহর বিমান ছিনতাই-এর সময় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারই যে মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দিয়ে এসেছিল, বিভিন্ন সময় সেই কথা স্মরণ করাতে পিছপা হয়নি তারা। মাসুদ আজহার নিয়ে চিনা কাঁটায় নতুন করে বিদ্ধ হওয়ার পর আসরে নামলেন খোদ কংগ্রেস সভাপতি। চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সখ্যের যে ছবি বিভিন্ন সময় তুলে ধরা হয়েছে, তাকেই আক্রমণের অস্ত্র বানিয়েছেন রাহুল। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, ‘দুর্বল মোদী ভয় পায় শি-কে। চিন ভারতবিরোধী কোনও কাজ করলে মোদীর মুখে কোনও শব্দ শোনা যায় না। মোদীর চিনা কূটনীতি হল, গুজরাতে চিনের সঙ্গে সখ্য, দিল্লিতে কোলাকুলি আর চিনে গিয়ে মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানানো।’

চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য গত কয়েক বছরে নানা চেষ্টা চালিয়েছে ভারত। চিনা রাষ্ট্রপতিকে ভারতে অভ্যর্থনা জানানোর পাশাপাশি সে দেশে গিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদীও। এত সখ্য বাড়িয়েও কেন মাসুদ আজহার নিয়ে ভারত বিরোধী অবস্থান নিল বেজিং, সেই প্রশ্নই তুলছে কংগ্রেস। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জইশ হামলার পরও মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয়েছিল ভারত। যদিও সেই পরিকল্পনাও বানচাল হয়ে যায় চিনের শেষ মুহূর্তের ভেটোয়।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কংগ্রেসের সমালোচনার জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপি-ও। এই জন্য তারা কাঠগড়ায় দাঁড় করাল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকেই। সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বললেন, ‘‘জওহরলাল নেহরু সাহায্য করাতেই ভারতের জায়গায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছিল চিন। সেই ফল এখন ভুগতে হচ্ছে ভারতকে।’’ পাশাপাশি রাহুলকে নিয়ে তাঁর কটাক্ষ,‘‘চিনের এই ভূমিকায় যখন সারা দেশ ব্যথিত, তখন রাহুলকে দেখে মনে হচ্ছে, খুব খুশি হয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি যা বলছেন, তা পাকিস্তানের সংবাদপত্রে হেডলাইন হবে।’’

আরও পড়ুন: চিনের বাধা, নিরাপত্তা পরিষদে নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা গেল না মাসুদ আজহারকে

জওহরলাল নেহরুকে আক্রমণ করতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের একটি বইকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। সেই বইতে বলা হয়েছে, ১৯৫৩ সালে ভারতকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ দিতে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি, জওহরলাল নেহরু ওই সদস্যপদ চিনকে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। চিনের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার পিছনে নেহরু-র আসল ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা অবশ্য এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

Masood Azhar Narendra Modi Rahul Gandhi United Nations Security Council China BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy