বিজেপির জঙ্গি-যোগ তুলে ধরে হোর্ডিং। তার ছবি তুলছেন এক ব্যক্তি। নয়াদিল্লিতে যুব কংগ্রেসের অফিসের সামনে। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই
উদয়পুর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত রিয়াজ় আখতারির সঙ্গে বিজেপি নেতার ছবি সামনে এসেছে। জম্মুতে গ্রামবাসীদের হাতে পাকড়াও হওয়া সশস্ত্র লস্কর জঙ্গি তালিব হুসেন বিজেপির আইটি সেলের নেতা বলে খবর। এই দুই ঘটনাকে অস্ত্র করে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের দলের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের যোগাযোগ নিয়ে যুব কংগ্রেস আজ দিল্লি জুড়ে ব্যানার ঝুলিয়ে প্রচারে নেমেছে। রাজস্থানের উদয়পুরে খুন এবং জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গি গ্রেফতারের ঘটনায় বিজেপি-যোগ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছে তৃণমূল।
বিজেপির জাতীয়তাবাদ যে ভুয়ো এবং তারা বরাবরই যে দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে সচেষ্ট, তা এ বার স্পষ্ট বলে মত কংগ্রেসের। দলের জনসংযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান পবন খেরার প্রশ্ন, ‘‘বিজেপির এ কেমন মতাদর্শ, যেখানে পয়গম্বরকে অপমান করা নূপুর শর্মারও জায়গা হয়? আবার নূপুর শর্মার বক্তব্যকে সমর্থন করার জন্য কানহাইয়া লালকে খুনের অভিযোগে ধৃত রিয়াজ আখতারিরও জায়গা হয়? একইসঙ্গে লস্কর জঙ্গি তালিব হুসেনও জায়গা পায়? একসময় দুই ধর্মের চরমপন্থী, হিন্দু মহাসভা ও মুসলিম লিগ কংগ্রেসের মতো জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হাত মিলিয়েছিল। বিজেপি কি তা থেকে অনুপ্রাণিত?’’
পয়গম্বর সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করায় বিজেপির সাসপেন্ড হওয়া মুখপাত্র নূপুর শর্মার গ্রেফতার দাবি করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। এর পরে রিয়াজ ও তালিবের সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ মেলায় আজ রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষের উপরে আর্থিক চাপ যত বাড়ছে, তা থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি ধর্মীয় বিভাজনের রাস্তা নিচ্ছে।’’
তৃণমূলের অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পাল্টা, ‘‘তৃণমূলের দম থাকলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ওই তদন্ত দাবি করুক! গুজরাতের দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীকে দায়ী করেও তো প্রচার হয়েছিল। তার পরে সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দিয়েছে, ওঁরা নিশ্চয়ই দেখেছেন।’’ সদ্যসমাপ্ত বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই বক্তব্যকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ময়দানে নেমে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। এই অবস্থায় বিজেপির বিরুদ্ধে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলে এ দিন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও বিজেপির সঙ্গে জঙ্গি-যোগের তদন্ত দাবি করেছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগাযোগের অভিযোগ নতুন নয়। তারা মনে করিয়ে দিচ্ছে, দু’বছর আগে বিজেপি নেতা তারিক আহমেদ মীরকে হিজবুল মুজাহিদিনের জন্য অস্ত্র জোগাড়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০১৭-য় মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বিজেপির আইটি সেলের নেতা ধ্রুব সাক্সেনাকে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করার অভিযোগে গ্রেফতার করে। বজরং দলের নেতা বলরাম সিংহকেও সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অসমের বিজেপি নেতা নিরঞ্জন হোজাই জঙ্গি সংগঠনকে অর্থ সাহায্যের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। বিজেপি শ্রীনগরের পুর নির্বাচনে সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ মহম্মদ ফারুক খানকেপ্রার্থী করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy