E-Paper

সাত বছরেও লক্ষ্য অধরা, কংগ্রেসের নোটবাতিল-তোপ

রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মরসুমে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা নতুন করে নোটবাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:২২
Rahul Gandhi.

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

নোটবাতিলের সাত বছর পূর্ণ হল। কিন্তু এখনও সংসারের কেনাকাটা বা ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচা—এর বেশির ভাগটাই নগদেই চলছে।

২০১৬-য় ৮ নভেম্বর রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আচমকাই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। ঘোষিত লক্ষ্য ছিল, বাজারে নগদের পরিমাণ কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানো, কালো টাকা শেষ করা, জাল নোটের সমস্যা সমাধান এবং সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বন্ধ করা। মোদী বলেছিলেন, তাঁর ৫০ দিন সময় চাই। তার পরে তাঁর লক্ষ্যে খামতি থাকলে তিনি চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে যে কোনও সাজা মাথা পেতে নিতে রাজি। আজ নোটবাতিলের সাত বছর পরে লোকাল সার্কলস সংস্থার সমীক্ষা জানিয়েছে, গত সাত বছরে যাঁরা ফ্ল্যাট-বাড়ি বা অন্য সম্পত্তি কিনেছেন, তাঁদের ৭৬ শতাংশ মানুষ হয় পুরো দাম বা তার কিছুটা অংশ নগদে মিটিয়েছেন। সমীক্ষায় ৫৬ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, গত ১২ মাসে তাঁদের মাসিক খরচের চার ভাগের এক ভাগই নগদে মিটিয়েছেন। নোটবাতিলের সময় বাজারে নগদের পরিমাণ ছিল ১৭ লক্ষ কোটি টাকা। এখন তা ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে।

রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মরসুমে আজ কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা নতুন করে নোটবাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ছত্তীসগঢ়ের জনসভায় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কালো টাকা খতম করবেন। হয়েছে কি? প্রধানমন্ত্রী কালো টাকা উদ্ধার করে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবে বলেছিলেন। মিলেছে কি?” সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘নোটবাতিল ছোট ব্যবস্থা, অসংগঠিত ক্ষেত্রকে শেষ করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। যাতে দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষের উপরে হামলা হলেও ১ শতাংশ মোদীর পুঁজিপতি বন্ধুদের ফায়দা হয়। এটা আসলে মানুষের পকেট কেটে মোদীর প্রিয় বন্ধুকে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি করার হাতিয়ার ছিল’।

এই আক্রমণ সত্ত্বেও বিজেপি বা মোদী সরকারের কেউ নোটবাতিলের পক্ষে মুখ খোলেননি। কংগ্রেসের বক্তব্য, ২০০৮-এর আর্থিক সঙ্কটের মেঘ কাটিয়ে ২০১১ থেকে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির গতি বাড়তে শুরু করেছিল। ২০১৬-র নোটবাতিল সেই রথ থামিয়ে দেয়। তারপর থেকে লাগাতার বৃদ্ধির হার কমেছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের প্রশ্ন, ‘‘মোদীজি ৫০ দিন চেয়েছিলেন। সাত বছর পরেও মানুষ নোটবাতিলের জ্বালায় জর্জরিত হয়ে জানতে চাইছে, এতে কী লাভ হয়েছে! কেন এক জনের
ইগোর জন্য নোটবাতিলের লাইনে দাঁড়িয়ে দেড়শো মানুষের প্রাণ গিয়েছিল? কেন লক্ষ লক্ষ ছোট ব্যবসা বন্ধ হয়েছে? কেন কোটি কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে? কেন সাধারণ মানুষের সঞ্চয় নষ্ট হয়েছে? কালো টাকা কি শেষ হয়েছে? সন্ত্রাস, মাওবাদী হিংসায় আর্থিক মদত কি বন্ধ হয়েছে? কেন ২০০০ টাকার নোট চালু হয়েছিল? কেন এখনও ৭৬ শতাংশ মানুষ নগদে সম্পত্তি কিনছেন?” আর কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালের কটাক্ষ, ‘‘নরেন্দ্র মোদীকে মানুষ মনে রাখবেন একবিংশ শতাব্দীর মহম্মদ-বিন-তুঘলক হিসেবেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress PM Narendra Modi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy