হরক সিংহ রাওয়ত। —ফাইল চিত্র।
ছ’বছর আগে তিনি ন’জন বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। হরক সিংহ রাওয়তের সেই দলত্যাগের ফলেই উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিল। জারি হয়েছিল রাষ্ট্রপতি শাসন।
এ বার সেই হরক সিংহ রাওয়তই দাবি করলেন, বিজেপিতে থেকে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছিল। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজনীতিকদের মুখে ঠিক এই ‘দলে থেকে দম বন্ধ হয়ে আসা’র সমস্যার কথাই শোনা গিয়েছিল। গত পাঁচ বছর বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হরক সিংহও উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনের আগে একই সমস্যার কথা বলে কংগ্রেসে ফিরতে চাইছিলেন। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আগেই বিজেপি রবিবার রাতে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। উত্তরাখণ্ডে বিজেপি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকেও তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
কিন্তু বিজেপিত্যাগী হরক সিংহ চাইলেও তাঁকে ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেই আপাতত চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
হরক সিংহ রাওয়তের দলত্যাগের ফলেই ২০১৬ সালে হরিশ রাওয়তকে মুখ্যমন্ত্রীর গদি থেকে সরতে হয়েছিল। উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট মোদী সরকারের রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেওয়ায় তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে ফেরেন। কিন্তু ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস হেরে যায়। সামনে ফের উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন।
হরিশ এ বার দলকে জেতাতে বদ্ধপরিকর। হরককে দলে ফেরানো নিয়ে তাঁর সতর্কবার্তা, এত দিন যে সব নেতা-কর্মীরা দলকে খাদ থেকে টেনে তুললেন, তাঁদের কথা ভাবা দরকার। হরক যা করেছিলেন, সেটা গণতন্ত্র, রাজ্যের মানুষের প্রতি অপরাধ। হরিশের অবশ্য যুক্তি, তিনি আগেই বলেছেন, হরকের ২০১৬ সালের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। তবে দল হরককে ফেরালে, তিনি তা মেনে নেবেন।
প্রবীণ নেতা হরিশ রাওয়তের এই আপত্তির জেরেই আজ হরক সিংহ রাওয়তের কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ হয়ে যায়। কংগ্রেসের ওয়ার রুমে হরিশ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গণেশ গোডিয়াল, পরিষদীয় দলনেতা প্রীতম সিংহের বৈঠক হয়। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেরার রাস্তা স্পষ্ট করতে হরক বলেছেন, উত্তরাখণ্ডে এমনিতেই কংগ্রেস জিতছে। তিনি কংগ্রেসে ফিরে এলে আরও বেশি আসন জিতবে। কংগ্রেস তাঁকে না ফেরালেও তিনি কংগ্রেসের জন্যই কাজ করবেন বলেও হরকের দাবি। বিজেপিতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসার কথা বলতে গিয়ে তিনি চোখের জলও ফেলেছেন।
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতৃত্ব, মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামিদের আবার অভিযোগ, দম বন্ধ হওয়াটা কোনও বিষয় নয়। হরক আসলে নিজের জন্য নিরাপদ আসন চাইছিলেন। তাঁর পুত্রবধূর জন্যও টিকিট চাইছিলেন। তা মিলবে না বুঝেই তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy