Advertisement
E-Paper

শবরী-মামলায় কেন সিঙ্ঘভি, ঝড় কংগ্রেসে

আইন যতই তাঁর পেশা হোক, এমন আবেদনের পক্ষে সওয়াল করা থেকে সিঙ্ঘভিকে নিরস্ত করতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। যার জেরে তৈরি হয়েছে টানাপড়েন।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:২০
রাজ্যসভার সাংসদ মনু সিঙ্ঘভি ডাক পেয়েছেন আদালতে দাঁড়িয়ে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিরোধিতা করার! —ফাইল চিত্র।

রাজ্যসভার সাংসদ মনু সিঙ্ঘভি ডাক পেয়েছেন আদালতে দাঁড়িয়ে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিরোধিতা করার! —ফাইল চিত্র।

মন্দির বিতর্কে আরও জড়িয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস।

শবরীমালার মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। গোটা দেশেই বিজেপিকে কোণঠাসা করতে এই হাতিয়ার ব্যবহার করতে চাইছে সর্বভারতীয় কংগ্রেস। আর সেই দলেরই রাজ্যসভার সাংসদ ডাক পেয়েছেন আদালতে দাঁড়িয়ে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিরোধিতা করার!

আইন যতই তাঁর পেশা হোক, এমন আবেদনের পক্ষে সওয়াল করা থেকে সিঙ্ঘভিকে নিরস্ত করতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। যার জেরে তৈরি হয়েছে টানাপড়েন।

শবরীমালায় ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলাদের প্রবেশ বন্ধই থাকুক, এই আর্জি নিয়ে আবেদন দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মহিলাদের ওই মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছিল, তারই পুনর্বিবেচনা চাওয়া হয়েছে ওই আবেদনে। যে আবেদনের সিনিয়র কৌঁসুলি হওয়ার কথা এআইসিসি-র অন্যতম মুখপাত্র এবং বাংলা থেকে কংগ্রেস সাংসদ সিঙ্ঘভির।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সুপ্রিম কোর্টে ১৩ নভেম্বরের শুনানির আগে মত বদল হয়েছে শবরীমালা মন্দির পরিচালনার কর্তৃপক্ষ ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ডের (টিডিবি) অন্দরেও। বোর্ডের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, নির্দিষ্ট বয়সের মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশের বিরোধিতা করে কোনও লিখিত বক্তব্য তারা আদালতে জানাবে না। টি়ডিবি-র সভাপতি এ পদ্মকুমার অবশ্য এই মুহূর্তে প্রকাশ্যে বিশদ মন্তব্যে যেতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘টিডিবি-র কমিশনার দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেই যা করার, করা হবে।’’

কেরলে মন্দির ঘিরে গোটা বিতর্কে প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে দলের হাইকম্যান্ডের অবস্থানের তফাত বারেবারেই সামনে এসেছে। মন্দির-কাণ্ডে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছিল কেরলের কংগ্রেস। এআইসিসি তাদের পরামর্শ দিয়েছিল সুর নরম করার। তার পরে স্বয়ং রাহুল গাঁধী শবরীমালা-কাণ্ডে রাজ্যের বাম সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। অথচ প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্য সরকারের ‘বাড়াবাড়ি’র বিরুদ্ধে পথে নেমেছে! এই ডামাডোলের মধ্যেই সিঙ্ঘভির সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে দেখা করেছেন মামলার আবেদনকারীরা। এআইসিসি-র তরফে সিঙ্ঘভিকে ‘ঘরোয়া ভাবে পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছে ওই মামলায় সওয়াল না করার। আবেদনকারীরাও সি আর্যম সুন্দরমকে বিকল্প কৌঁসুলি হিসেবে ঠিক করে রেখেছেন।

যোগাযোগ করা হলে সিঙ্ঘভি অবশ্য এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য, ‘‘আবেদনকারীরা সিঙ্ঘভির কাছে গিয়ে পরামর্শ নিয়েছেন। তাঁকেই আইনজীবী হিসেবে আদালতে দাঁড়াতে হবে, এমন কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ এর আগে নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের হয়ে আদালতে সওয়াল করে বাংলার কংগ্রেসের বিরাগভাজন হয়েছিলেন সিঙ্ঘভি। বাংলা থেকে তৃণমূলের সমর্থনে রাজ্যসভায় যাওয়ার পরে আবার পঞ্চায়েত হিংসার মামলায় রাজ্য সরকারের পক্ষে দাঁড়ানোয় কলকাতায় তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ পর্যন্ত করেছিল কংগ্রেস! মুখে মহিলাদের সমানাধিকারের কথা বলে আদালতে কংগ্রেসের সাংসদ উল্টো সওয়াল করবেন— এই বিড়ম্বনা এখন এড়াতে চাইছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।

Sabarimala Congress Manu Singhvi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy