রাহুল গান্ধী বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’-র অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু কংগ্রেসের নিচু তলায় সংগঠন না থাকলে সেই ভোট চুরি রুখবে কে, এ নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্নের মুখে কংগ্রেস হাইকমান্ড এ বার ‘ভোট রক্ষক’ নিয়োগ করতে চলেছে। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারদের নাম যোগ করছে। যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী, সেখানে কংগ্রেসের ভোটারদের বেছে বেছে ভোটার তালিকাদের নাম বাদ দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে। এর ফলে কংগ্রেস খুব কম ব্যবধানে হেরে যাচ্ছে। এ জন্য ‘ভোট রক্ষক’ নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, এই ‘ভোট রক্ষক’ নিয়োগ প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হবে। প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট রক্ষক নিয়োগ করা হবে। রাজস্থানের জয়পুর গ্রামীণ ও অলওয়ার, উত্তরপ্রদেশের বাসগাঁও, ছত্তীসগঢ়ের কাঁকের ও মধ্যপ্রদেশের মোরেনা। এই পাঁচ লোকসভা কেন্দ্রেই গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস খুব কম ব্যবধানে হেরেছিল। এই ভোট রক্ষকদের কাজ হবে ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের নাম ঢোকানো এবং কংগ্রেসের সমর্থকদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টার দিকে নজর রাখা।
রাহুল গান্ধী এর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন, কর্নাটকের মহাদেবপুরায় বিজেপি ভুয়ো ভোটার যোগ করে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসকে হারিয়ে দিয়েছিল। সম্প্রতি রাহুল অভিযোগ তুলেছেন, কর্নাটকে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে ৬ হাজারের মতো ভোটারের নাম কাটার চেষ্টা হয়েছিল।
এ নিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক বি আর পাটিলের অভিযোগের ভিত্তিতে কর্নাটক পুলিশের সিআইডি আগেই তদন্ত করছিল। আজ কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার এ বিষয়ে এসআইটি বা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে। রাহুলের অভিযোগ ছিল, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সিআইডি-কে তথ্য না দিয়ে তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। কোথা থেকে ভোটারদের নাম মোছার চেষ্টা হয়েছিল, তা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের উপরে চাপ বাড়াতেই এসআইটি গঠনের সিদ্ধান্ত।আজ রাহুল গান্ধী ওয়েনাড়ে বলেছেন, ‘‘আলন্দে ভোট চুরির একেবারে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। কর্নাটকে সিআইডি তদন্ত চলছে। কোন জায়গা থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, সেই তথ্য চাইলেও জ্ঞানেশ কুমার দেননি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে এর থেকে বড় প্রমাণ আর হতে পারে না। নরেন্দ্র মোদী যে ভোট চুরি করছেন, তার এমন প্রমাণ পেশ করব যে ভারতের কারও মনে কোনও সন্দেহ থাকবে না।’’
সেই ভোট চুরির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রে কি না, তা নিয়ে অবশ্য রাহুল গান্ধী উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন। রাহুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সেটা আপনারা আন্দাজ করুন। আমরা হাইড্রোজেন বোমা আনতে চলেছি। যা বলছি, তার প্রমাণ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কিছু বলছি না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)