এক লক্ষ ত্রিশ হাজার কোটি টাকা। রাফাল চুক্তিতে এই বিশাল অঙ্কের টাকার ‘দুর্নীতি’ হয়েছে বলে দাবি করে নরেন্দ্র মোদীকে আজ কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন রাহুল গাঁধী।
মন্ত্রিসভা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে পাশ কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী একাই ফ্রান্সে গিয়ে রাফাল চুক্তি রাতারাতি বদলে ফেলেছিলেন বলে রাহুল অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন। মনমোহন জমানায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে দেওয়া বরাত বাতিল করে তুলে দেওয়া হয়েছিল অনিল অম্বানীর সংস্থার হাতে। কংগ্রেস আজ অভিযোগ করে, সেই বেসরকারি সংস্থার বিমান তৈরির অভিজ্ঞতা নেই। আর নতুন চুক্তির মাত্র ১২ দিন আগে তৈরি হয়েছে বিমান তৈরির ওই সংস্থা। আর একটি সংস্থা চুক্তির ১৪ দিন পরে তৈরি হয়েছে, তা-ও ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে।
দু’দিন আগে রাহুল সেই সংস্থাকে ৩০ হাজার কোটি টাকার বরাতের কথা তুলে মোদীকে বিঁধেছিলেন। সেই সংস্থারই বিবৃতি তুলে কংগ্রেস আজ দেখায়, আরও ১ লক্ষ কোটি টাকা ৫০ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাতের দাবি করেছে সংস্থাটি। ফলে সব মিলিয়ে সেই শিল্পপতিকে ‘সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার’ অঙ্কটি দাঁড়াচ্ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকায়। আর রাহুল টুইট করেন, ‘‘দুঃখিত, আগের টুইটে লিখেছিলাম মিস্টার ৫৬ ইঞ্চির (নরেন্দ্র মোদী) বন্ধু ৪০০ কোটি ডলারের বরাত পেয়েছেন। ১৬০০ কোটি ডলার যোগ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। আসল ফায়দা ২০০০ কোটি ডলারের। খুব দুঃখিত। #১৩০০০০ কোটির রাফাল দুর্নীতি।’’
আসলে রাফাল-প্রচারকে বফর্সের মতো উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে চান কংগ্রেস সভাপতি। সেকারণে মোদী আজ দেশে ফেরার আগেই ‘দুর্নীতির অঙ্ক’ সামনে রেখে আরও চাপ বাড়াল তাঁর দল। বিজেপি নেতারা পাল্টা অভিযোগ আনেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন রাহুল। তবে রাফাল বিমানের আসল দাম খোলসা করেনি তারা।
কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, ‘‘সরকার না-বললেও বেসরকারি সংস্থাটি আগেই দাম ঘোষণা করে দিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিয়ম অনুসারে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্বাক্ষর ছাড়া দেশের সংস্থা বরাত পায় না। অথচ বেসরকারি সংস্থা বরাতপ্রাপ্তির কথা ঘোষণা করলেও নির্মলা সীতারামন বিলকুল ‘অসত্য’ বলে দাবি করেন যে এমন বরাত হয়নি।
মনমোহন জমানার শেষ লগ্নে টু জি, কয়লা কেলেঙ্কারির বড় অঙ্ক নিয়ে এভাবেই ঝাঁপাতেন মোদী আর তাঁর সেনাপতিরা। বিজেপি এখন বুঝছে, রাফাল সে-দিকেই এগোচ্ছে। তবে বিজেপির কাছে স্বস্তি, এখনও কংগ্রেস ছাড়া অন্য বিরোধী দল এই নিয়ে সরব হচ্ছে না। কংগ্রেস অবশ্য বলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার তুঙ্গে উঠলে তারাও শামিল হতে বাধ্য হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy