সরকারের ১১ বছর পূর্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজের মন্ত্রকের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে দাবি করেছিলেন, মোদী সরকারের কারণে মণিপুর-সহ উত্তর-পূর্ব ভারত, জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শাহের সেই দাবি আসলে অবাস্তব, ভিত্তিহীন ও সরকারের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা বলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।
গত কাল নরেন্দ্র মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্ণ হয়। সেই কারণে সব মন্ত্রক নিজেদের সাফল্যের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রচারে নেমেছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক্স অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘‘মোদী সরকারের ১১ বছর জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নকশালবাদ সমস্যা অন্তিম পর্যায়ে। জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত। ভারত এখন সন্ত্রাবাদীদের ঘরে ঢুকে হামলার জবাব দেওয়া শুরু করেছে। যা মোদী সরকারের নেতৃত্বে ভারতের বদলে যাওয়া ছবিকেই তুলে ধরছে।’’ আজ জয়রাম পাল্টা বলেন, ‘‘অমিত শাহের ওই দাবি তাঁর মন্ত্রকের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।’’ প্রসঙ্গত ১০ দিনের বন্ধ ডাকলেও মণিপুরে মেইতেই সশস্ত্র বাহিনী আরাম্বাই টেঙ্গল তিন দিনের মাথায় বন্ধ প্রত্যাহার করে নিল। তবে জানাল, তাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আসেম কানন সিংহকে নিঃশর্ত মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালানো হবে।
জয়রামের দাবি, উত্তর-পূর্ব ভারতে শান্তি ফিরে আসার দাবি করলেও, বাস্তবে মণিপুর এখনও জ্বলছে। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার নীতি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চূড়ান্ত খারাপ। দৈনন্দিন জীবনের দুর্দশা আমজনতার মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।’’ কংগ্রেস নেতার সংযোজন, ‘‘পহেলগামের হত্যাকারীদের এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। শোনা যাচ্ছে, ওই জঙ্গিরাই ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে পুঞ্চ ও পরের বছরের অক্টোবরে গগনগির ও গুলমার্গ হামলার পিছনে ছিল।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শাহের ভূমিকার সমালোচনা করতে ছাড়েননি জয়রাম। তাঁর কথায়, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না পহেলগামের জঙ্গিদের শাস্তি দিতে পেরেছেন না মণিপুরে শান্তি ফেরাতে সফল হয়েছেন। তা সত্ত্বেও তিনি মিথ্যা সাফল্যের ঢাক পেটাচ্ছেন। তবে তিনি তাঁর ছেলে (জয় শাহ)-এর জন্য যা করেছেন তা যদি তিনি সাফল্য হিসেবে ধরেন, তাহলে অন্য কথা।’’ পাল্টা বিজেপির বক্তব্য, জয়রাম রমেশ তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব সম্ভবত ইতিহাস ভুলে গিয়েছেন। গত ১১ বছরে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হয়েছে, দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়েছে। পাশ হয়েছে তিন তালাক আইনও। তাদের দাবি, কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া জম্মু-কাশ্মীর শান্ত। গত কয়েক বছরে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক গিয়েছেন সেখানে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)