কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের দাবি উড়িয়ে দিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘পীযূষ গয়াল বুক চাপড়ে যা খুশি দাবি করতে পারেন। আমার কথা মনে রাখবেন, ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়ের সময়সীমার কাছে নতি স্বীকার করবেন মোদী।’’
শুক্রবার পীযূষ জানিয়েছিলেন, কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে আমেরিকার সঙ্গে নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সই করবে না ভারত। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নয়াদিল্লি তার নিজের শর্তেই বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।’’ আর তিন দিন পরেই ভারতীয় পণ্যে ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক কার্যকর শুরু হওয়ার কথা। তার আগে পীযূষের ওই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে কূটনীতি এবং বণিক মহলে। যদিও রাহুলের দাবি, ওয়াশিংটনের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত আগামী তিন দিনের মধ্যেই বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে নয়াদিল্লিকে।
প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ছিল ২৬ শতাংশ। কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (যদিও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়)। ৯০ দিনের ওই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। ফলে তার আগেই ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি আমেরিকায় গিয়ে বাণিজ্য চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনার পরে চলতি সপ্তাহেই দেশে ফিরে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজীব আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। তার পরেই চুক্তি নিয়ে মন্তব্য শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই আভাস দিয়েছেন, ৯ জুলাইয়ের পর ওই সময়সীমা আর বৃদ্ধি করতে চান না তিনি। এই আবহে ‘সময়সীমা’ এবং ‘শর্ত’ নিয়ে পীযূষের মন্তব্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মতানৈক্যের বার্তা স্পষ্ট বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
জুনের শেষ সপ্তাহে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ভারত। পীযূষের মন্তব্য, ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নিউজিল্যান্ড, ওমান, আমেরিকা, চিলি, অথবা পেরু, অনেক দেশের সঙ্গে চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে।’’ ৯ জুলাইয়ের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে আমেরিকার সঙ্গে ফলপ্রসূ হবে কি না সংবাদ সংস্থা এএনআইকে নরেন্দ্র মোদী সরকারর বাণিজ্যমন্ত্রীর জবাব, ‘‘একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি তখনই হয়, যখন পারস্পরিক সুবিধা থাকে। যখন ভারতের স্বার্থরক্ষা করে চুক্তিটি করা হয়। জাতীয় স্বার্থকে সর্বদা অগ্রাধিকার দিয়ে ভারত সর্বদা উন্নত দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি করতে প্রস্তুত।’’