কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে আমেরিকার সঙ্গে নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সই করবে না ভারত। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। সেই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, ‘‘নয়াদিল্লি তার নিজের শর্তেই বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।’’
গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ছিল ২৬ শতাংশ। কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (যদিও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়)। ৯০ দিনের ওই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। ফলে তার আগেই ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই আভাস দিয়েছেন, ৯ জুলাইয়ের পর ওই সময়সীমা আর বৃদ্ধি করতে চান না তিনি। এই আবহে ‘সময়সীমা’ এবং ‘শর্ত’ নিয়ে পীযূষের মন্তব্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মতনৈক্যের বার্তা স্পষ্ট বলেই মনে করা হচ্ছে। জুনের শেষ সপ্তাহে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ভারত। পীযূষের মন্তব্য, ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নিউজিল্যান্ড, ওমান, আমেরিকা, চিলি, অথবা পেরু, অনেক দেশের সঙ্গে চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে।’’
কিন্তু আলোচনা কী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ফলপ্রসূ হবে? সংবাদ সংস্থা এএনআইকে নরেন্দ্র মোদী সরকারর বাণিজ্যমন্ত্রীর জবাব, ‘‘একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি তখনই হয়, যখন পারস্পরিক সুবিধা থাকে। যখন ভারতের স্বার্থরক্ষা করে চুক্তিটি করা হয়। জাতীয় স্বার্থকে সর্বদা অগ্রাধিকার দিয়ে ভারত সর্বদা উন্নত দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি করতে প্রস্তুত।’’ প্রসঙ্গত, মার্চে আমেরিকায় বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে বৈঠকের পরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি নিয়ে আমরা এগোব।’’
যদিও পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা নিশ্চিত করে দিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তির রূপরেখা স্থির করা কঠিন বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ, এ ক্ষেত্রে বেজিংয়ের যে ‘শক্ত অবস্থান’ ছিল, তা নয়াদিল্লির নেই। বিরল খনিজ থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কাঁচামাল পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রের চিনের উপর নির্ভরতা রয়েছে আমেরিকার। কিন্তু নয়াদিল্লির সে সুবিধা নেই। ঘটনাচক্রে, গত আমেরিকায় গিয়ে বাণিজ্য চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনার পরে চলতি সপ্তাহেই দেশে ফিরে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজীব আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। তার পরেই চুক্তি নিয়ে মন্তব্য শোনা গেল কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখে।