Advertisement
E-Paper

ভিডিও-হুলে নাকাল কংগ্রেস

পশ্চিমবঙ্গের মতো ‘স্টিং ভিডিও’ নিয়ে সরগরম এ বার উত্তরাখণ্ডের রাজনীতি। পশ্চিমবঙ্গে নারদ-নিউজের ভিডিওয় নাজেহাল তৃণমূল। ভোটের মুখে যা নিয়ে দারুণ রকম সরব এখন কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলি। উত্তরাখণ্ডে কিন্তু কংগ্রেসই বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে গোপন ক্যামেরার হুলে। বিপাকে ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৪
হরিশ রাওয়াত

হরিশ রাওয়াত

পশ্চিমবঙ্গের মতো ‘স্টিং ভিডিও’ নিয়ে সরগরম এ বার উত্তরাখণ্ডের রাজনীতি। পশ্চিমবঙ্গে নারদ-নিউজের ভিডিওয় নাজেহাল তৃণমূল। ভোটের মুখে যা নিয়ে দারুণ রকম সরব এখন কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলি। উত্তরাখণ্ডে কিন্তু কংগ্রেসই বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে গোপন ক্যামেরার হুলে। বিপাকে ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতকে।

কংগ্রেসের ন’জন বিধায়ক বিদ্রোহ করায় এমনিতেই রাওয়াত সরকার টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে ক’দিন ধরে। মুখ্যমন্ত্রীকে আস্থা ভোটের পরীক্ষা দিতে হবে সোমবার। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার ঠিক দু’দিন আগে ভিডিও-হুলে বিদ্ধ হলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক হরকসিংহ রাওয়াত গোপনে তোলা ওই ভিডিও দেখিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসের, এমনকী বিজেপি বিধায়কদেরও কোটি কোটি টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির দাবি, অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হবে রাজ্যে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন রাতে অসম থেকে উড়ে এসে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক করায় এ নিয়ে জল্পনা জোরদার হয়ে ওঠে। যদিও তড়িঘড়ি উত্তরাখণ্ড নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এ দিন নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের মতোই হরিশ রাওয়াতও আজ এই ভিডিওকে জাল বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর দিকে আঙুল তুলে হরিশের অভিযোগ, দু’জনের ‘অশুভ আঁতাঁত’-এর ফল হল এই জাল ভিডিও। এ ভাবে রাজ্যের মানুষকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করা হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

কী রয়েছে ওই গোপন ভিডিওয়?

বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক হরকসিংহ রাওয়াতের অভিযোগ, গত ২৩ মার্চ দেহরাদূন বিমানবন্দরে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়। সেখানেই তিনি বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক ও বেশ কয়েক জন বিজেপি বিধায়কের সমর্থনের বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা দিতে রাজি হন। তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয় বলেও হরকের অভিযোগ। এ জন্য কেন্দ্রের কাছে নিরাপত্তারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

যে সংবাদ-চ্যানেলের তরফে এই ‘স্টিং অপারেশন’ করা হয়েছে, হরিশ রাওয়াত আঙুল তুলেছেন সেটির মালিক-সম্পাদকের দিকেও। তাঁর যুক্তি, ওই চ্যানেলের তরফে বরাবরই ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার চেষ্টা করা হয়। রাজ্যের সব নেতা-আমলাই এদের ভয় করে চলেন। যে মুখ্যমন্ত্রীই তাদের ‘ব্ল্যাকমেলিং’-এর সামনে মাথা নোয়াতে অস্বীকার করেছেন, তাঁকেই এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, টাকার লোভেই ওই ন’জন বিধায়ক বিজেপির আনুগত্য স্বীকার করেছে। এখন তাঁরাই আবার টাকার লোভ দেখানোর অভিযোগ তুলছে। কংগ্রেস ও বিক্ষুব্ধদের মধ্যে একটি বিষয়ে অবশ্য লক্ষ্যণীয় মিল দেখা যাচ্ছে। দু’পক্ষই দলের হাইম্যান্ডের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ। আজ অবশ্য রাওয়াতের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে বিবৃতি দিয়েছেন অম্বিকা সোনি। বিজেপির বিরুদ্ধে সরকার ফেলার চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন।

বিজেপির দাবি, ৭০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস থেকে ৯ জন আসায় তাঁদের শক্তি এখন ৩৭। অর্থাৎ রাওয়াত সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। বিক্ষুব্ধরা তাই বিজেপির সঙ্গে মিলে রাষ্ট্রপতির কাছেও রাওয়াত সরকারকে হটানোর আবেদনও জানান। কংগ্রেসও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উত্তরাখণ্ডে সরকার ফেলার চক্রান্তের অভিযোগ তোলে।

রাতে অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায় খানিকটা। ওই ন’জনের বিরুদ্ধে বিধানসভার স্পিকার আগেই দলত্যাগ-বিরোধী আইনে শো-কজ নোটিস জারি করেছিলেন। সূত্রের খবর, স্পিকার রাতে ওই ন’জনেরই সদস্যপদ খারিজ করেছেন। এটা রাওয়াতকে কিছুটা আশা জুগিয়েছে। কারণ, বিক্ষুব্ধ ৯ জন ভোট দিতে পারবেন না। তাতে গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য লাগবে ৩১ জনের সমর্থন। কংগ্রেসের বাকি ২৭ জন ও প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের ৬ জনের ভোট সরকারের পক্ষেই যাওয়ার কথা। ফলে রাওয়াত পাচ্ছেন ৩৩টি ভোট। বিক্ষুব্ধরা গত কাল স্পিকারের নোটিসের বিরুদ্ধে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এর পরেই সামনে এল গোপন ক্যামেরার ছবি। আস্থা ভোট ঘিরে অঙ্কের খেলাটা সামলে ওঠার মুখেই স্টিং-বিদ্ধ হলেন রাওয়াত।

harish rawat congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy