—প্রতীকী চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরে জনাদেশের ভিত্তিতে নতুন সরকার গঠনের আগে বিধানসভায় অ-নির্বাচিত বিধায়ক বাছাই করার কাজ স্থগিত রাখার দাবি তুলল কংগ্রেস এবং এনসি। ২০১৯-এর জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন এবং ২০২৩-এ ওই আইনের সংশোধনী অনুযায়ী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল একযোগে পাঁচ জন অনির্বাচিত বিধায়ককে বেছে নিতে পারবেন। তার মধ্যে কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে আসা উদ্বাস্তুদের প্রতিনিধি থাকবেন। জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ৮ অক্টোবর। কংগ্রেসের বক্তব্য, মনোনীত বিধায়ক বাছাইয়ের কাজ নতুন সরকার গঠনের পরে তার পরামর্শ নিয়েই করতে হবে।
শুক্রবার কংগ্রেস নেতারা লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিন্হাকে পাঁচ প্রতিনিধির মনোনয়ন অনুমোদন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। না হলে সেটা গণতান্ত্রিক নীতি এবং সংবিধানের পরিপন্থী হবে বলে দাবি করেন তাঁরা। রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা রয়েছে যে, ভোটের ফল ঘোষণার পরেই পাঁচ বিধায়ক মনোনয়নের কাজ সেরে ফেলা হতে পারে। পাঁচ জন মনোনীত বিধায়ককে ধরলে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার সদস্যসংখ্যা ৯৫ এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে প্রয়োজন হবে ৪৮টি আসন। কোনও দলই যদি একক গরিষ্ঠতা না পায়, সে ক্ষেত্রে মনোনীত বিধায়কদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সহ-সভাপতি রবিন্দর শর্মা বলেন, ‘‘আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে সরকার গঠনের আগে পাঁচ বিধায়কের মনোনয়নের বিরোধিতা করছি। এ ধরনের যে কোনও পদক্ষেপ গণতন্ত্র, জনাদেশ এবং সংবিধানের মৌলিক নীতির উপরে আঘাত।’’ শর্মার অভিযোগ, সংখ্যার হেরফের ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া বিজেপি। তাই তারা আগেভাগে মনোনয়ন চাইছে। কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়বে।
ফারুক এবং ওমর আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি-ও এই মনোনীত বিধায়ক বাছাইয়ের বিরোধিতা করেছে। শুক্রবার এনসি নেতা ওমর আবদুল্লা আরও এক ধাপ এগিয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে সরকারি কার্যবিধি পরিবর্তন করে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং উপরাজ্যপালের ক্ষমতা বাড়ানো যায়। তার পরে মেহবুবার মেয়ে ইলতিজা মুফতিও শনিবার অভিযোগ করেন, জম্মু-কাশ্মীরের সরকারকে কেন্দ্রের ‘রবার স্ট্যাম্প সরকারে’ পরিণত করার চেষ্টা চলছে। নির্বাচিত সরকার আখেরে ‘দন্তহীন বাঘ’ ছাড়া কিছু হবে না। মনোনীত বিধায়ক বাছাই এবং মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর উদ্যোগ সেটাই প্রমাণ করছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য শুক্রবারই দাবি করেছেন যে, ওমর মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। নতুন করে নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা কমানোর কোনও চেষ্টা হয়নি। সরকারি কার্যবিধির পরিবর্তন ২০১৯-এর আইনেই ছিল, ২০২০ সালেই তার বিজ্ঞপ্তি
বেরিয়ে গিয়েছে।
এ বারের নির্বাচনে কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট বেঁধে লড়ছে। তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবেন বলে আশা করছেন কংগ্রেস এবং এনসি নেতৃত্ব। শনিবার প্রবীণ এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লা স্পষ্ট বলেছেন, ফল ঘোষণার পরে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর কোনও ইচ্ছা তাঁদের নেই। ফারুকের দাবি, বিজেপি যদি মনে করে থাকে তারা ভোটে জিতে জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতায় আসবে, তা হলে তারা কল্পরাজ্যে বাস করছে।
ফারুকের এ কথা বলার কারণ হল, সম্প্রতি জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, ভোটের পরে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার কথা ভাবতে পারে এনসি। সেই রটনাই আজ খারিজ করেছেন ফারুক। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা বিজেপির সঙ্গে যেতে পারি না। আমরা যা ভোট পেয়েছি, সেটা বিজেপি-বিরোধী ভোট। বিজেপি মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকান, মসজিদ, স্কুলের উপরে বুলডোজ়ার চালায়। ওদের সঙ্গে হাত মেলানো অসম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy