Advertisement
E-Paper

কংগ্রেসে উলটপুরাণ রাহুল-ব্রিগেডের বিদ্রোহে

প্রবীণ নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। কংগ্রেসে এমনটাই রীতি। এ বার কিন্তু নবীন নেতাদের বিদ্রোহে নড়েচড়ে বসল হাইকম্যান্ড। দলের সম্পাদকদের হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে প্রদেশ সভাপতিদের সতর্ক করে দিল প্রকাশ্যে বা সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার ব্যাপারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪১

প্রবীণ নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। কংগ্রেসে এমনটাই রীতি। এ বার কিন্তু নবীন নেতাদের বিদ্রোহে নড়েচড়ে বসল হাইকম্যান্ড। দলের সম্পাদকদের হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে প্রদেশ সভাপতিদের সতর্ক করে দিল প্রকাশ্যে বা সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার ব্যাপারে।

কংগ্রেসের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা বর্ষীয়ান নেতা জনার্দন দ্বিবেদীকে কাল চিঠি দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধীর অনুগামী এক ঝাঁক তরুণ নেতা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রবীণ নেতারা প্রকাশ্যে আলটপকা মন্তব্য করা থেকে বিরত হোন। নইলে দলের ক্ষতি হচ্ছে। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাইকম্যান্ড চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দিল দলের শীর্ষ সারির পদে থাকা নেতাদের। হাইকম্যান্ডের তরফে ওই চিঠিতে জনার্দন লিখেছেন, “যে ভাবে কিছু প্রবীণ নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য করছেন, তাতে দলের ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন এইআইসিসি-র কিছু সম্পাদক। তাই দলের অনুমতি ছাড়া ভবিষ্যতে কোনও মন্তব্য করার থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।”

সন্দেহ নেই কংগ্রেস রাজনীতিতে এই ধরনের নজির বিরল। অতীতে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বা প্রবীন নেতারা দলবিরোধী মন্তব্য করেছেন, শরদ পওয়াররা সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলও ভেঙেছেন, কিন্তু এআইসিসি-র সম্পাদক বা তরুণ নেতারা কখনওই সেই সাহস দেখাতে পারেননি। উল্টে কংগ্রেসের প্রবীণ বা বর্ষীয়ান নেতা সম্পর্কে কোনও সম্পাদক মন্তব্য করলে হয় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে, নয়তো সাসপেন্ড করেছে দল।

এ বার কেন উল্টো পথে দল?

বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে দলের নেতাদের বিরত থাকতে আগেও সতর্ক করেছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু এ বারে তার যুক্তি হিসেবে জনার্দন যে ভাবে এআইসিসি-র সম্পাদকদের ক্ষোভের কথা উল্লেখ করেছেন, এমনকী তাঁদের চিঠির প্রতিলিপিও জুড়ে দিয়েছেন নিজের সতর্কবার্তার সঙ্গে, সেটাই বেশ আলাদা। এর ব্যাখ্যায় কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, “তরুণ নেতাদের বিদ্রোহের পিছনে আসলে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর মদত রয়েছে বুঝেই আজ এ ভাবে শৃঙ্খলারক্ষার জন্য চিঠি দিয়েছেন জনার্দন।” দলের অন্য শীর্ষ নেতারাও স্বীকার করছেন যে, সনিয়া-রাহুলই আসলে দলের বর্ষীয়ান, অকেজো কিছু নেতাকে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে চাইছেন। কারণ, নিজেদের মৌরসিপাট্টা বজায় রাখতে এঁরা রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে দলকে দুর্বল করে চলেছেন।

হাইকম্যান্ডের পদক্ষেপে অবশ্য আজ ভারসাম্য রক্ষার একটি চেষ্টাও লক্ষ্য করা গিয়েছে। জনার্দন আজ দলে ১৪ জন সম্পাদককেও আলাদা একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠির বক্তব্য, “আপনারা যেভাবে প্রকাশ্যে সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তা-ও ঠিক নয়। এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে আপনাদেরও বিরত থাকতে হবে।”

জনার্দনের এই চিঠিতে নবীনদের বিদ্রোহের পর্বের আপাতত ইতি হল বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, সংগঠন থেকে বর্ষীয়ানদের সরিয়ে কবে নতুন টিম গড়বেন রাহুল? দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, চার রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর রদবদল সেরে ফেলবেন রাহুল। তবে রাহুল ঘনিষ্ঠ এক নেতা এ-ও বলেন, এক ধাক্কাতেই যে সব সাধারণ সম্পাদক বা ওয়ার্কিং কমিটি সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হবে তা নয়। তবে বিজেপিতে যে ভাবে বাজপেয়ী-আডবাণী-জোশী জমানায় ইতি টেনেছেন নরেন্দ্র মোদী, অরুণ জেটলিরা, রাহুলও তেমনই চাইছেন। জনার্দন দ্বিবেদী, দিগ্বিজয় সিংহ, অম্বিকা সোনি, গুলাম নবি আজাদ, এ কে অ্যান্টনি, মতিলাল ভোরার মতো বর্ষীয়ান নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিতে চান তিনি।

সম্ভবত রাহুলের এই মতিগতি আঁচ করেই আগেভাগে টুইট করেছেন তাঁর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ নেতা দিগ্বিজয়। লিখেছেন, “সম্পাদকদের দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছি। কংগ্রেসে প্রজন্মের পরিবর্তন অবশ্যই দরকার।”

congress rahul national news sonia gandhi rahul gandhi online national news brigade rebellion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy