E-Paper

‘৮৯ লক্ষ অভিযোগ পাত্তা দেয়নি কমিশন’

ভোটাধিকার যাত্রা শেষে কাল পটনায় রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদবদের সভা। তার আগে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের উপরে চাপ বাড়িয়ে রাখল কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:১৮

—প্রতীকী চিত্র।

বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা পরিমার্জনের সময়ে কংগ্রেসের বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ)-রা প্রায় ৮৯ লক্ষ অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করলেও, সে সব পাত্তাই দেয়নি নির্বাচন কমিশন— আজ এই অভিযোগে সরব হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের মতে, এত বড় মাপের অনিয়ম কমিশনের ভোটার তালিকা পরিমার্জনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যে কারণে দলের পক্ষ থেকে নতুন করে ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজ করার দাবি তোলা হয়েছে। অন্য দিকে, কমিশনের বক্তব্য, আবেদন করার জন্য যে নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে, তা মেনে আবেদন জানানো হয়নি।

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন ও বাদ দেওয়া সংক্রান্ত আবেদন জানানোর শেষ দিন ১ সেপ্টেম্বর। আজ সকাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দাবি ছিল, খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে নাম অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেওয়া মিলিয়ে ১২৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু আজ কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা অভিযোগ করেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে সংবাদমাধ্যমের কমিশনের সূত্রের ভিত্তিতে খবর ছাপানো হচ্ছিল যে, দলগুলির পক্ষ থেকে অভিযোগ জমা করা হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবে তালিকা তৈরির সময় ছাড়াও, নাম সংযোজন ও বাদ দেওয়ার কাজ যখন চলছিল, তখনও কংগ্রেসের বিএলএ-রা মোট ৮৯ লক্ষ অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। যার প্রাপ্তিস্বীকার রসিদও রয়েছে কংগ্রেসের কাছে। কিন্তু সেই সব অভিযোগ কমিশন খারিজ করে দেয়।’’ খেরার দাবি, কমিশন জানায়, কোনও রাজনৈতিক দলের বিএলএ আবেদন জানালে হবে না, ওই আবেদন জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই। খেরার দাবি, ‘‘এত সংখ্যায় অভিযোগ খারিজ করে দেওয়ার ঘটনা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তাই দলের পক্ষ থেকে দাবি, বিহারে নতুন করে ভোটার তালিকা পরিমার্জন করা হোক। এক জন অবৈধ ভোটার যাতে ভোট দিতে না পারে, আবার এক জন বৈধ ভোটারও যেন বাদ না পড়ে।’’

ভোটাধিকার যাত্রা শেষে কাল পটনায় রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদবদের সভা। তার আগে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের উপরে চাপ বাড়িয়ে রাখল কংগ্রেস। যদিও আজ পাল্টা জবাবে বিহার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতির পক্ষ থেকে ৮৯ লক্ষ ভোটারের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও সে ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত নিয়ম মানেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। অথচ, গত ২২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট ১২টি রাজনৈতিক দলকেই স্পষ্ট জানিয়েছিল, আপত্তি যা করার, তা পদ্ধতি (ফর্ম্যাট) মেনেই করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ জানানোর প্রশ্নে পদ্ধতি না মানায় জেলার নির্বাচনী অফিসারেররা ওই অভিযোগগুলি পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

কমিশন সূত্রে দাবি, খসড়া তালিকায় স্থানান্তরণের জন্য ২৫ লক্ষ, মৃত বলে ২২ লক্ষ, ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে ৯.৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। ৭ লক্ষের নাম বাদ পড়েছে একাধিক স্থানে নাম থাকায়। খেরার কথায়, নাম বাদ দেওয়ার পিছনে একটি নির্দিষ্ট ‘প্যাটার্ন’ বা ছক লক্ষ্য করা গিয়েছে। ৭,৬১৩টি বুথে যে নাম বাদ পড়েছে, তাদের ৭০% মহিলা। তেমনই ৬৩৫টি বুথে পরিযায়ী শ্রেণিতে ৭৫ শতাংশের বেশি নাম কাটা গিয়েছে মহিলাদেরই। খেরার কথায়, ‘‘অথচ, আমরা সকলেই জানি, সাধারণত পরিযায়ী হিসাবে পুরুষেরাই বাইরে কাজে যান। মহিলারা ঘরে থাকেন। মহিলাদের পরিকল্পিত ভাবে নিশানা বানিয়ে তাঁদের নাম কাটার কৌশল নিয়েছে কমিশন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রায় আট হাজার বুথে ৭৫ শতাংশ ব্যক্তির নাম মৃত বলে কেটে দেওয়া হয়েছে। অথচ, কমিশনের তালিকায় মৃত সেই ভোটারেরা পরে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে চা খেয়েছেন। ফলে কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই সামগ্রিক ভাবে এই ভোটার তালিকা বাতিলের দাবি জানিয়েছে দল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Election Commission of India Voter List Controversy Bihar Special Intensive Revision Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy