বিস্মৃতির আড়াল থেকে ফিরে এলেন সীতারাম কেশরী। ভোটের দায় কংগ্রেসকে তার ভুলে যাওয়া জাতীয় সভাপতির কথা মনে পড়িয়ে দিল। বিহারের অতীব অনগ্রসর শ্রেণি বা ইবিসি ভোটারদের মন জয় করতে আজ আকবর রোডের সদর দফতরে সীতারাম কেশরীর ২৫-তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করল কংগ্রেস। খোদ রাহুল গান্ধী এসে কেশরীর ছবিতে পুষ্পার্ঘ্য দিলেন। কেশরীর নাতির সঙ্গে কথা বললেন। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপালকে রাহুল নির্দেশ দিলেন, কেশরীর পরিবারের যেন খেয়াল রাখা হয়। যদিও ২০০০ সালে কেশরীর মৃত্যুর পরে গত ২৫ বছরে কংগ্রেস কোনও দিনও তাঁর জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেনি।
বিহারের জনসংখ্যার ৩৬% ইবিসি বা অতীব অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ। রাজ্যের ১১২টি জাতি ইবিসি তালিকাভুক্ত। এই ইবিসি ভোটারদের মন জয় করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সমস্তিপুরে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরের গ্রামে যান। কর্পূরী ইবিসি নেতা ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কর্পূরী মণ্ডল কমিশনেরও আগে বিহারে অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করেছিলেন। গত বছর তাঁকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেয় মোদী সরকার। মোদীর এই ইবিসি মন জয়ের কৌশলের জবাবে আজ কংগ্রেস সীতারাম কেশরীর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছে। কেশরী নিজে বিহারের অতীব অনগ্রসর শ্রেণি থেকে উঠে এসে বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন। তার পরে জাতীয় কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ হন। ১৯৯৬-এ নরসিংহ রাওয়ের পরে তিনি কংগ্রেস সভাপতি হন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস কার্যকরী কমিটিতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আনা প্রস্তাব মেনে তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সনিয়া কংগ্রেস সভানেত্রীর দায়িত্ব নেন। সভাপতির পদ থেকে অপসারণের পরে কেশরীকে কংগ্রেস দফতরে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদী সমস্তিপুরে অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের পরিবার কী ভাবে কেশরীকে অপমান করেছিল, তা দেশ কখনও ভুলবে না। ওঁদের কাছে নিজের পরিবারইসব। বিহারের গর্ব কেশরীকে কংগ্রেসের পরিবার শৌচালয়ে বন্ধ করে রেখেছিল। ওঁকে তুলে ফুটপাথে ফেলে দিয়েছিল।’’
২০০০ সালে সীতারাম কেশরীর প্রয়াণের পরে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল বিহারে তাঁর অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের ইতিহাসে নরসিংহ রাও, সীতারাম কেশরীর জমানা ব্রাত্যই থেকেছে। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, কংগ্রেস দফতরে কেশরীর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের জন্য তাঁর নাতি রাকেশ কেশরী কিছু দিন আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন। তার পরেই কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে দিল্লিতে আসতে বলে। আজ রাহুল তাঁর সঙ্গে কথা বলে পরিবারের সকলের খোঁজখবর নেন। তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণও জানান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)