আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্কের মহাবোঝা চাপানোর পরে চলতি জাপান সফর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনেকটাই স্বস্তির। কিন্তু ৩১ তারিখ থেকে চিনে এসসিও সম্মেলনের কার্যসূচি শুরু হওয়ার পর, তাঁকে কাঁটার উপরে হাঁটতে হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের তরফ থেকে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধান বিরোধী দলের অভিযোগ, প্রবল চাপের মধ্যে থাকা ভারতকে নিজের শর্তে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাধ্য করছে বেজিং। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কথায়, কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে ভারতের হাতে এখন আর দর কষাকষি করার বিশেষ কিছু নেই। সেই সুযোগটা নিচ্ছে চিন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই চিন সফরটি নিয়ে পিছনে ফিরে দেখা জরুরি। আমরা চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাধ্য হয়েছি বাস্তবের মাটিতে কোনও পদক্ষেপ ছাড়াই। তাদের সুবিধাজনক শর্তে তা ঘটছে।” ২০২০ সালে গালওয়ানের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংসদে করা মন্তব্যকে ফিরিয়ে আনছে কংগ্রেস। মোদী বলেছিলেন, ভারতের সীমানার ভিতর কেউ ঢুকে আসেনি। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল সে সময়। জয়রামের কথায়, “কাপুরুষের মতো চিনকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল।”
এর আগে, আমেরিকার শুল্ক আগ্রাসনকে পাল্লা দিতে বেজিংয়ের তরফে একাধিকবার বার্তা এসেছে ভারত ও চিনকে একজোট হওয়ার। হাতে হাত মিলিয়ে বিশ্বকে হাতি ও ড্রাগনের নাচ দেখানোর বার্তা দিয়েছিল চিন। যদিও সে বিষয়ে খুব একটা স্বর তোলেনি ভারত। বেজিং ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধিতা করে মোদীকে স্বাগত জানালেও নয়াদিল্লি ও চিনের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব যথেষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিজেদের সুবিধাজনক শর্তে ভারত-চিন সীমান্ত দাগিয়ে নিয়ে ভারতের বাজারে আরও বেশি করে প্রবেশাধিকার চাইছে চিন— এমনটাই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে তারা যে ভারতের পাশে নেই, তা সদ্য অপারেশন সিঁদুরের পরই স্পষ্ট। পাকিস্তানকে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে অস্ত্র সাহায্য দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠকে মোদী নিঃসন্দেহে ক্ষোভ জানাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসসিও-র যৌথ ঘোষণাপত্রে পহেলগাম হামলার উল্লেখ করা যাবে কি না, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)