পেহলু খান। ফাইল চিত্র।
গো-রক্ষকদের হাতে প্রায় দু’বছর আগে খুন হয়েছেন তিনি। রাজস্থানের অলওয়ারের সেই পশুপালক পেহলু খানের বিরুদ্ধে রাজস্থান পুলিশ মরণোত্তর চার্জশিট পেশ করেছে বলে খবর সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। গরু পাচারের অভিযোগে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে পেহলুর দুই ছেলে ইরশাদ (২৫) ও আরিফ (২২) এবং ট্রাকমালিক খান মহম্মদের বিরুদ্ধেও। যদিও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত টুইটারে দাবি করেছেন, চার্জশিটে পেহলুর নাম নেই। রয়েছে তাঁর দুই ছেলে ও ট্রাকমালিকের নাম। তা-ও অন্য একটি মামলায়।
এই চার্জশিট তৈরি হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। তার ১৩ দিন আগে রাজস্থানে বিজেপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। অলওয়ারের পুলিশ সুপার এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই জানান, আগের জমানায় গত ২৪ মে একটি গরু পাচার মামলায় পুলিশের পেশ করা চার্জশিটটি গ্রহণ করে আদালত। কিন্তু যেহেতু পেহলু আগেই মারা গিয়েছেন, ফলে তাঁকে এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে না। তবে চার্জশিটের সংক্ষিপ্তসারে পেহলুর নাম রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
২০১৭ সালের ১ এপ্রিল জয়পুরের পশুমেলা থেকে গবাদি পশু কিনে হরিয়ানায় ফিরছিলেন পেহলু এবং তাঁর দুই ছেলে। জয়পুর-দিল্লি জাতীয় সড়কে তাঁদের ট্রাক আটকায় গো-রক্ষকদের দল। বেধড়ক মারা হয় পেহলু ও তাঁর ছেলেদের। দু’দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মারা যান পেহলু। মোবাইল ফোনে তোলা মারধরের ভিডিয়োটি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিয়োর উপর ভিত্তি করেই প্রাথমিক ভাবে দু’টি এফআইআর দায়ের করেছিল রাজস্থান পুলিশ। একটি যারা মারধরে অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে। অন্যটি পেহলুদের বিরুদ্ধে। পুলিশ দাবি করেছিল, জেলাশাসকের অনুমতি ছাড়া অবৈধ ভাবে গবাদি পশু পাচার করছিলেন পেহলুরা।
যদিও পেহলুর বড় ছেলে ইরশাদের বক্তব্য, তাঁদের কাছে গরু নিয়ে যাওয়ার বৈধ অনুমতি ছিল। গো-রক্ষকেরা যখন তাঁদের রাস্তা আটকে তাণ্ডব শুরু করে, সেই নথি তাঁরা দেখিয়েওছিলেন। কিন্তু উন্মত্ত জনতা সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলে দেয়। পেহলুকে খুনের অভিযোগে দু’শোরও বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর হয়, যার মধ্যে ছ’জনের পরিচয় জানা গিয়েছিল। এরা সকলেই এখন জামিনে মুক্ত।
আজ পেহলুকে নিয়ে নতুন করে তরজা শুরু হয়ে যায়। এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি-সহ অনেকে বলতে থাকেন, বিজেপি সরকারের পঠেই হাঁটছে কংগ্রেস সরকারও। পরে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত দাবি করেন, বিজেপি সরকারের আমলে তদন্তের উপরে ভিত্তি করেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যদি দেখা যায় তদন্তে কোনও ফাঁক রয়েছে, তা হলে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে। গো-রক্ষার নামে যারা তাণ্ডব চালায়, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।’’ আবারহ রাজস্থানের রামগড়ের বিজেপি বিধায়ক জ্ঞান দেব আহুজার দাবি, ‘‘পেহলুর পরিবার দাগি। এর আগেও এদের বিরুদ্ধে গবাদি পশু পাচারের অভিযোগ ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy