Advertisement
E-Paper

সচিন-রেখার গরহাজিরায় জোর বিতর্ক

এক জন এসেছেন মাত্র তিন দিন। আর অন্য জন একটু বেশি, সব মিলিয়ে মোট সাত দিন। গত দু’বছরে রাজ্যসভায় ক্রিকেট তারকা সচিন তেন্ডুলকর এবং বলিউড অভিনেত্রী রেখার উপস্থিতির হার যথাক্রমে এই রকমই। যা ভাঁজ ফেলেছে অন্য সাংসদদের কপালে। সেলিব্রিটি বলেই কি তাঁদের হাজিরায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে, আজ সেই প্রশ্ন উঠেছে সংসদে। সচিন আর রেখাকে মনোনয়ন দিয়ে এখন যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে কংগ্রেস। দলের নেতা রাজীব শুক্ল জানিয়েছেন, তারকা সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৭
শুক্রবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে সচিন। মাস কয়েক আগে সংসদে রেখা।  পিটিআই ও ফাইল চিত্র।

শুক্রবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে সচিন। মাস কয়েক আগে সংসদে রেখা। পিটিআই ও ফাইল চিত্র।

এক জন এসেছেন মাত্র তিন দিন। আর অন্য জন একটু বেশি, সব মিলিয়ে মোট সাত দিন।

গত দু’বছরে রাজ্যসভায় ক্রিকেট তারকা সচিন তেন্ডুলকর এবং বলিউড অভিনেত্রী রেখার উপস্থিতির হার যথাক্রমে এই রকমই। যা ভাঁজ ফেলেছে অন্য সাংসদদের কপালে। সেলিব্রিটি বলেই কি তাঁদের হাজিরায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে, আজ সেই প্রশ্ন উঠেছে সংসদে। সচিন আর রেখাকে মনোনয়ন দিয়ে এখন যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে কংগ্রেস। দলের নেতা রাজীব শুক্ল জানিয়েছেন, তারকা সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

২০১২ সালের এপ্রিলে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল সচিনকে। জুন মাসে শপথ নেওয়ার সময়ে তিনি বলেছিলেন, ভারতে খেলার উন্নতির জন্য কাজ করবেন। কিন্তু এত দিনে মাত্র তিন দিন অধিবেশনে এসেছেন তিনি। ডেপুটি স্পিকার জানিয়েছেন, শেষ তিনি এসেছিলেন ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর। রেখাও মনোনীত হন ২০১২-র এপ্রিলে। তার পরে সাত দিন এসেছেন। শেষ বার এসেছিলেন এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি। সংসদে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় শেষমেশ মুখ খুলেছেন সচিন নিজেও। জানিয়েছেন, তিনি কারও কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। কোনও প্রতিষ্ঠানের অসম্মান তিনি করেননি। দাদা অজিতের অসুস্থতার কারণে তিনি দিল্লির বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। সেই সময় দাদার পাশে থাকা অনেক বেশি জরুরি ছিল। তাঁর টুইট, “সব বন্ধুকে অনেক ধন্যবাদ। সদ্য বাইপাস সার্জারির পরে সবার প্রার্থনা আর শুভেচ্ছায় আমার দাদা ক্রমশ সেরে উঠছে।”

কিন্তু আজ সংসদে সচিনের গরহাজিরা নিয়ে মুখ খোলেন সিপিআইয়ের পি রাজীব। তিনি জানান, “সচিন এখানে এসেছেন তিন দিন। আর রেখা সাত দিন।” এই তথ্য জানিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ওই দুই তারকা সাংসদ কি এ ব্যাপারে কোনও অনুমতি নিয়েছেন? কারণ সংবিধানের ১০৪ ধারা অনুযায়ী, সংসদের যে কোনও কক্ষে কোনও সদস্য যদি টানা ৬০ দিন অনুপস্থিত থাকেন, তবে ওই আসন শূন্য হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। প্রশ্নের উত্তরে ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন জানান, এ ক্ষেত্রে নিয়মের কোনও হেরফের হয়নি। পি রাজীব-সহ অন্য কিছু সাংসদ আগেও এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু কুরিয়েনের বক্তব্য, “সচিন টানা ৪০ দিন আসেননি। আর রেখার অনুপস্থিতির হার তাঁর চেয়েও কম। তাই সংবিধানের কোনও ধারাই লঙ্ঘন করা হয়নি।”

সংসদে সেলিব্রিটি সাংসদদের দেখা যায় না এই অভিযোগ বহু দিনের। কিন্তু বলা হচ্ছে, সচিন সবার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। এ বছর কোনও অধিবেশনেই দেখা যায়নি তাঁকে। এত দিনে কোনও বিতর্কেও অংশ নেননি তিনি। বিতর্কের মুখে কংগ্রেস নেতা রাজীব শুক্ল বলেছেন, “ওঁদের আরও বেশি করে সংসদে আসা উচিত। রেখা আগামী সপ্তাহ থেকেই আসছেন। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে সাংসদ হিসেবে কোনও সুবিধাই নেননি সচিন বা রেখা।”

সমালোচনায় সরব রাজ্যসভার আর এক সদস্য জাভেদ আখতার। তিনি বলেছেন, “সাংসদ হওয়াটা কোনও ট্রফি নয় যে, কেউ সেটা হাতে নিল আর চলে গেল। ওঁদের দায়িত্ব রয়েছে, তাই ওঁদের আসা উচিত।”

গত কাল এনসিপি নেতা ডি পি ত্রিপাঠী সংসদের বাইরে সচিন-রেখা অনুপস্থিতি বিতর্ক উত্থাপন করেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি সচিনকে ক্রিকেটার হিসেবে পছন্দ করি। রেখাকেও তাঁর অভিনয়ের জন্য ভাল লাগে। কিন্তু রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে তাঁদের আচরণ নিন্দনীয়।” তাঁর মতে, দীর্ঘদিন এ ভাবে অনুপস্থিত থেকে তাঁরা সংসদ এবং সংবিধানের অবমাননা করেছেন। এই ধরনের মানুষকে সংসদে মনোনীত করা উচিত নয়। ত্রিপাঠীর মন্তব্য, “যাঁরা সচিন বা রেখার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করেন, তাঁদের জন্য আমার করুণা হয়।’’

গত সপ্তাহে একই রকম বিতর্ক ওঠে হেমা মালিনী এবং তাপস পালকে নিয়েও। নতুন সরকার গঠনের পরে প্রথম দফার অধিবেশনে একেবারেই দেখা যায়নি তাঁদের। তবে হইচইয়ের পর থেকে হেমা নাকি এখন সংসদে নিত্য হাজিরা দিচ্ছেন!

sachin rekha Rajya Sabha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy