কংগ্রেসের দলীয় কর্মসূচিতে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধল অসমে। অসমের করিমগঞ্জ জেলায় কংগ্রেসের এক সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি পরিবেশন করা হয়। ঘটনাচক্রে সেটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতও। ওই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে অসমে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। তবে ভিডিয়োটিকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। জবাব দিয়েছে কংগ্রেস শিবিরও।
বিজেপিশাসিত অসমের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অশোক সিঙ্ঘল কংগ্রেসের ওই সভার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। ১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা দলীয় সভায় ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি পরিবেশন করছেন। দাবি করা হচ্ছে, গত সোমবার করিমগঞ্জের শ্রীভূমি শহরে কংগ্রেসের এক সভায় ওই গানটি পরিবেশন করা হয়েছে।
ভিডিয়োটি পোস্ট করে সমাজমাধ্যমে অশোক লিখেছেন, ‘‘অসমের শ্রীভূমিতে কংগ্রেসের এক সভায় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবেশন করা হয়েছে। ওই দেশটি উত্তর-পূর্ব ভারতকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়।’’ তাঁর অভিযোগ, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য কংগ্রেস অসমের জনবিন্যাস পরিবর্তন করতে গত কয়েক দশক ধরে অনুপ্রবেশে সাহায্য করেছে। কংগ্রেস ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ তৈরির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
আরও পড়ুন:
কংগ্রেসের সভার ওই ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে অসমের বিজেপি শিবিরও। কংগ্রেস ‘বাংলাদেশের মোহে আচ্ছন্ন’ বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। সমাজমাধ্যমে অসম বিজেপি লিখেছে, ‘‘মাত্র কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ গোটা উত্তর-পূর্বকে গিলে নিয়ে একটি মানচিত্র প্রকাশের সাহস দেখিয়েছে। এখন বাংলাদেশ-আচ্ছন্ন কংগ্রেস অসমে গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইছে। এর পরেও যদি কেউ তাদের (কংগ্রেসের) উদ্দেশ্য বুঝতে না-পারেন, তবে তিনি অন্ধ বা এতে মদতদাতা, কিংবা উভয়ই।’
ভিডিয়োটিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাঁধতে জবাব দিয়েছে কংগ্রেসও। অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান। এই গানটির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বিজেপি সবসময় বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলার (পশ্চিমবঙ্গের) মানুষকে অপমান করে। ওদের (বিজেপির) আইটি সেল সব সময় বাংলার মানুষকে অপমান করে।”
বিজেপিকে নিশানা করে গগৈ আরও বলেন, “ওরা (বাংলার প্রতি) তাচ্ছিল্য প্রকাশ করে। ওরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইতিহাস এবং তাঁর দর্শন বোঝে না। আমি মনে করি বাংলার মানুষ এবং দেশের অন্যপ্রান্তে বসবাসকারী বাঙালিকে বিজেপি শুধুমাত্র নিজেদের ভোটের জন্য ব্যবহার করে। কিন্তু তাঁদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং আবেগকে বোঝার চেষ্টা করে না।”