বিদেশি প্রতিষেধকের সঙ্গেই কার্যকারিতার প্রশ্নে পাল্লা দিচ্ছে দেশীয় প্রতিষেধক, উপরন্তু দামেও সস্তা, নিরাপদও। এই যুক্তিতেই দেশে তৈরি দুই প্রতিষেধক প্রথম দফায় বেছে নেওয়া হয়েছে বলে গতকাল মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের সপক্ষে আজ তথ্য-পরিসংখ্যান দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
শনিবার থেকে দেশে শুরু হচ্ছে গণটিকাকরণ অভিযান। প্রথম দফায় তিন কোটি দেশবাসীকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার জন্য হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাক্সিন ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড প্রতিষেধককে বেছে নিয়েছে কেন্দ্র। ভারতে কোভিশিল্ডের উৎপাদন ও সরবরাহ করার দায়িত্বে রয়েছে পুণের সিরাম সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন শুধু ওই দু’টি সংস্থার প্রতিষেধককে বেছে নেওয়া হয়েছে। আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পলের দাবি, ‘‘কার্যকারিতা ও সুরক্ষার প্রশ্নে ভারতের দুই প্রতিষেধক নিরাপদ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। প্রতিষেধক প্রয়োগে ভয়ের কিছু নেই। অথচ বিশ্বের অন্য প্রতিষেধকের তুলনায় তা দামে সস্তা।’’
দেশীয় প্রতিষেধক কতটা সস্তা, সেই ব্যাখ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সিরাম সংস্থার কাছ থেকে কেন্দ্র প্রথম পর্বে ১.১ কোটি ডোজ় কোভিশিল্ড কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গড়ে কোভিশিল্ডের দাম পড়ছে প্রতি ডোজ় পিছু ২০০ টাকা। সিরামের সিইও আদার পুনাওয়ালা আজই রাতে জানান, গরিব মানুষের কথা ভেবে তাঁরা ভারত সরকারকে ডোজ় পিছু ২০০টাকা করে ১০ কোটি ডোজ় বিক্রি করবেন। তার পর বাজারে প্রতি ডোজ় ১ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হবে। অন্য দিকে, ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে গোড়ায় ৫৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিন কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। প্রতি ডোজ় ২৯৫ টাকা হিসাবে ৩৮.৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভারত বায়োটেক সংস্থা ১৬.৫ লক্ষ ডোজ় কোভ্যাক্সিন সরকারকে বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ, মন্ত্রকের ব্যাখ্যায় আদতে ৫৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিনের জন্য প্রতি ডোজ় পিছু গড়ে ২০৬ টাকা খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে।