Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Coronavirus in India

পুজোর বাজারে হুঁশিয়ার, কিন্তু কান দিচ্ছে কে!

সাবধানবাণীর তোয়াক্কা না-করে এই দু’দিন ঠাসাঠাসি ভিড় করে পুজোর জামা-জুতো কিনতে ঝাঁপাবেন, তা প্রায় নিশ্চিত।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ০৫:১৪
Share: Save:

আশা দেখাচ্ছে অঙ্ক। আশঙ্কায় ফেলছে জনতা!

অঙ্ক বলছে, দেশে অ্যাক্টিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা টানা আট দিন ধরে ন’লক্ষের নীচে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থের সংখ্যা নতুন আক্রান্তের চেয়ে আরও এক বার বেশি। কোভিডজয়ীর মোট সংখ্যা ৬৫ লক্ষের কাছাকাছি। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৮৭.৫৬ শতাংশ।

তবু উদ্বেগ, অস্বস্তি রয়েই যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের। উদ্বেগ, কারণ এই পরিসংখ্যানে আশ্বস্ত হয়ে পুজো-দীপাবলিতে যদি পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের আমজনতা বেপরোয়া হয়ে, স্বাস্থ্যবিধি না-মেনে ভিড় করে রাস্তায় নামেন, তা হলে এত দিনের যাবতীয় উদ্যোগ মাঠে মারা যাবে। পুজোর আগের শেষ শনি-রবি আগামিকাল ও পরশু। কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ যে সাবধানবাণীর তোয়াক্কা না-করে এই দু’দিন ঠাসাঠাসি ভিড় করে পুজোর জামা-জুতো কিনতে ঝাঁপাবেন, তা প্রায় নিশ্চিত।

দেশে আক্রান্ত ৭৪,২৯,২৩৩

সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার্স

শুক্রবারের করোনা বুলেটিন।

সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক

৭৩,৭০,৪৬৮

মৃত - ১,১২,১৬১

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত - ৬৩,৩৭১

সতর্ক ভাবে দুর্গাপুজো কাটানোর আর্জি জানিয়ে বাংলার আঙ্গিকে নতুন পোস্টার প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ঢাকির মুখে মাস্ক। পোস্টারে কেন্দ্রের পরামর্শ, ৬৫ বছরের বেশি বয়সিরা, কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন মানুষেরা, ১০ বছরের চেয়ে কম বয়সের শিশুরা এবং গর্ভবতীরা যেন বাড়ি থেকে না-বেরোন।

আরও পড়ুন: কোভিড সামলাতে ১ লক্ষ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন কিনছেন মোদী

এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘অনেকের ধারণা হয়েছে, লকডাউন শেষ মানেই সংক্রমণের ভয় শেষ। কে বুঝবে, বিষয়টা একেবারেই তা নয়! কলকাতায় কোভিড-শয্যার টানাটানি জেনেও এক শ্রেণির মানুষ যে ভাবে ‘আর কত দিন এ সব মানা যায়’ স্লোগান তুলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছেন, প্রত্যেক বারের মতোই ভিড় ঠেলে পুজোর কেনাকাটা করছেন এমনকি দিঘা-বকখালি গিয়ে সমুদ্রেও নেমে পড়ছেন— তাঁদের প্রতি করুণা প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। এঁরা তো অন্যদের জীবনও বিপন্ন করছেন।’’ মৃত্যুহার ১.৫২ শতাংশে নামলেও গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মৃতের সংখ্যা যে আবার ন’শোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে, সেই কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: করোনার পর চিনা অর্থনীতি টপকে যেতে পারে আমেরিকাকে

এক দিকে সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে এই আশঙ্কা, অন্য দিকে করোনা পরিস্থিতিতে নিম্নগামী অর্থনীতি নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ। মাথা-পিছু জিডিপি-র হিসেবে ভারতকে ছাপিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের আশঙ্কা, চলতি বছরে ভারতের অর্থনীতির ১০.৩ শতাংশ সঙ্কোচন হবে। এই হিসেবকে ‘সরকারের আরও একটা দুর্দান্ত নজির’ বলে খোঁচা দিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর মন্তব্য, ‘‘পাকিস্তান বা আফগানিস্তানও ভারতের থেকে ভাল ভাবে করোনা পরিস্থিতি সামলাচ্ছে।’’ অনেকের মতে, কেনাকাটা কমে যাওয়া নিয়ে বিরোধীদের দাবি খারিজ করতে মোদী সরকার উৎসবের আগে দোকানমুখী আমজনতার উদাহরণ দিতেই পারে। কিন্তু সেই কেনাকাটা করতে গিয়েই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বহু মানুষ। সরকার পড়েছে উভয়-সঙ্কটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE