Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

অক্সিজেনের হাহাকার, ঘাটতি মেটাতে শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কেন্দ্রের

গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি যে শুরু হয়েছে, তা কমার লক্ষণ নেই। উল্টে তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:১৫
Share: Save:

গত দু’সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হওয়ায় সংক্রমণ পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যাওয়ার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে বলেই আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রোজ দু-আড়াই লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় দেশ জুড়ে দেখা দিয়েছে শয্যা, অক্সিজেনের অভাব। ঘাটতি দেখা দিয়েছে জীবনদায়ী ওষুধের। রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় সাহায্য করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার হাসপাতালগুলিকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক। হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে ২২ এপ্রিল থেকে শিল্পক্ষেত্রে অক্সিজেনের ব্যবহারে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কেন্দ্র।

গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি যে শুরু হয়েছে, তা কমার লক্ষণ নেই। উল্টে তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১২ দিনে দৈনিক সংক্রমণের হার ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬.৬৯ শতাংশে। সংক্রমণের হারে এই মুহূর্তে শীর্ষে ছত্তীসগঢ়। ওই রাজ্যে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার প্রায় ৩০.৩৮ শতাংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোয়া (২৪.২৪ শতাংশ) ও মহারাষ্ট্র (২৪.১৭ শতাংশ)। আগামী এক মাসেও পরিস্থিতি উন্নতির বিশেষ সম্ভাবনা দেখছেন না স্বাস্থ্য-কর্তারা। তাঁদের আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন শেষ হলে সে রাজ্যে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্রটি স্পষ্ট হবে। একই সঙ্গে কুম্ভে আসা ব্যক্তিরা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণকে নতুন করে ইন্ধন জোগাবেন। বিশেষ করে কুম্ভ ফেরতদের মধ্যে বড় সংখ্যক গ্রামীণ এলাকার বলে আগামী দিনে গ্রামীণ ভারতে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি খারাপ হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা।

আজ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা। সূত্রের মতে, সংক্রমণ পরিস্থিতি ছাড়াও অক্সিজেনের জোগান, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, যথেষ্ট সংখ্যায় অক্সিজেনযুক্ত বেড, আইসিইউ রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের মতে, সব রাজ্যই কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেন ও জীবনদায়ী ওষুধের সরবরাহ বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনও জানিয়েছে, লাফ দিয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ায় তাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সর্ব্বোচ্চ সীমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। গোটা রাজ্য জুড়ে ঘাটতি দেখা গিয়েছে শয্যা, অক্সিজেনযুক্ত শয্যা, জীবনদায়ী ওষুধের। ভর্তি হাসপাতালের আইসিইউ। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার হাসপাতালগুলিকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার নির্দেশ দিল কেন্দ্র। চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্ভব হলে গোটা হাসপাতাল, না-হলে হাসপাতালের একটি ব্লক বা ওয়ার্ডকে করোনা রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা করে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সুষ্ঠু যোগাযোগ রাখার জন্য একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ায় গোটা দেশ জুড়েই দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের অভাব। সাময়িক ভাবে হাসপাতালে অক্সিজেনের স্বল্পতা দূর করতে শিল্প ক্ষেত্রে আপাতত কিছু দিনের জন্য অক্সিজেন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কেন্দ্র। আজ বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠী বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওষুধ শিল্প, তেল, স্টিল, পরমাণু চুল্লি, বর্জ্য নিষ্কাশন প্ল্যান্টের মতো ৯টি ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনও শিল্প সংস্থা আগামী ২২ এপ্রিল থেকে শিল্প উৎপাদন খাতে অক্সিজেন ব্যবহার করতে পারবে না। পাশাপাশি, রাজ্যগুলিকেও বলা হয়েছে, চিকিৎসায় অক্সিজেনের ব্যবহার বুঝেশুনে করতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE