Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

কোনও উপসর্গ নেই, কিন্তু ৭ বার করোনা পজিটিভ গুজরাতের ছাত্র

হাসপাতাল আর কোয়রান্টিন সেন্টার করেই দিন কাটছে ওই তরুণের।

সাত বার রিপোর্ট পজিটিভ তরুণের। —প্রতীকী চিত্র।

সাত বার রিপোর্ট পজিটিভ তরুণের। —প্রতীকী চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বডোদরা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২০ ১৭:০৯
Share: Save:

চারিদিকে মৃত্যুমিছিল দেখে ভয় চেপে বসেছিল মনে। বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে তাই তড়িঘড়ি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে ছুটেছিলেন। সে প্রায় এক মাস আগের কথা। তার পর আর বাড়ি ফেরা হয়নি ১৯ বছরের জয় পাটনির। এই এক মাসে উপসর্গহীন অবস্থায় সাত-সাত বার কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়েছে তাঁর শরীরে। তার জেরে হাসপাতাল আর কোয়রান্টিন সেন্টার করেই দিন কাটছে তাঁর।
জয় গুজরাতের বডোদরার বাসিন্দা। স্থানীয় এমএস কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র। করোনা সংক্রমণের নিরিখে বডোদরায় যে ক’টি হটস্পট চিহ্নিত করেছে সরকার, তার মধ্যে তাদের নগরওয়াড়া এলাকাও রয়েছে। গত মাসে সেখানে এক শিশুর মৃত্যু হয়। তাতেই ভয় পেয়ে যায় গোটা পরিবার। করোনার জেরেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে ধারণা জন্মায় তাঁদের।

পরে যদিও জানা যায়, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু করোনা আতঙ্কে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে ছোটেন জয় এবং তাঁর বাবা-মা। সেখানে তাঁদের তিন জনের শরীরেই সংক্রমণ ধরা পড়ে। প্রথমে গোত্রী মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে রাখা হয় তাঁদের। ১৩ দিনের মাথায় সেখান থেকে বাবা-মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, এখনও ছাড়া পাননি জয়।

আরও পড়ুন: ১৭ মে-র পর কতটা লকডাউন? কাল মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে মোদীর বৈঠক​

হাঁচি, কাশি, মাথা ধরা, ক্লান্তি ভাব, এই ধরনের কোনও উপসর্গই নেই জয়ের শরীরে। কিন্তু গত ১২ এপ্রিল থেকে যত বারই কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে, তত বারই তাঁর শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তাই হাসপাতাল আর কোয়রান্টিন সেন্টার করেই দিন কাটছে তাঁর। টানা ২০ দিন গোত্রী-তে ভর্তি ছিলেন তিনি। উপসর্গ নেই বলে সপ্তাহখানেক আগে বডোদরা রেল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট কোয়রান্টিন সেন্টারে সরিয়ে আনা হয় তাঁকে।

উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গ থাকা রোগীদের জন্যই ওই রেল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটটিকে কোয়রান্টিন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। সেখানে অন্য রোগীদের সঙ্গে রয়েছেন জয়। একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘হাঁচি-কাশি, ক্লান্তি ভাব, মাথা ধরা কোনও সমস্যাই নেই তাঁর। বরং প্রথম দিন থেকেই একেবারে স্বাভাবিক তিনি।’’

পরিবার পরিজনদের থেকে দূরে কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকতে ভাল না লাগলেও, দিব্যি সময় কেটে যায় বলে জানিয়েছেন জয়। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে সবকিছুই করতে পারছি আমি। ইচ্ছা হলে বারান্দায় পায়চারি করি। সিনেমা দেখি। ফোনে কথা বলি। আবার গেমও খেলি। এ ভাবেই দিন কেটে যায়। বার বার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় মা দুশ্চিন্তা করছে। তবে আমি অত ভাবছি না। দুশ্চিন্তা করে লাভটাই বা কী?’’

আরও পড়ুন: লকডাউন শেষে প্রথম সপ্তাহই অগ্নিপরীক্ষা, কর্মী-নিরাপত্তায় জোর কেন্দ্রের​

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার উপসর্গ না থাকলে রোগীকে ছাড়ার আগে রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পিসিআর (আরটি-পিসিআর) টেস্ট করা হয়। এতে মরা ভাইরাসও ধরা পড়ে। হতে পারে সেই কারণেই বার বার জয়ের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। তবে এ নিয়ে জয়কে এখনও পর্যন্ত সঠিক ভাবে কিছু জানাননি চিকিৎসকেরা।

এ দিকে, উপসর্গহীন অথবা মৃদু উপসর্গ মিলেছে এমন রোগীদের একটানা তিন দিন জ্বর না এলে, অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন না থাকলে, ১০ দিন পর্যবেক্ষণে থাকার পরই তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ক্ষেত্রে বাড়ি ফিরে সাত দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে তাঁদের। কিন্তু তাঁর থেকে বাবা-মা যদি ফের সংক্রমিত হন, সেই ভয়ে বাড়ি ফিরতে রাজি হননি জয়। যত ক্ষণ না রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে, তিনি কোয়রান্টিনেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India COVID-19 Vadodara Gujarat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE