নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। মঙ্গলবার তা নেমে এসেছে ৮ হাজারের ঘরে। ২০২০ সালের ৩ জুন ৮ হাজারের ঘরে শেষবারের জন্য ছিল দৈনিক সংক্রমণ। তার পর যত দিন গিয়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল রোজ নতুন করে আক্রান্ত হওয়া। ১ লক্ষের দোরগোড়া থেকে কমতে কমতে প্রায় ৮ মাস পর তা আবার ৮ হাজারের ঘরে। দৈনিক সংক্রমণের মতো কমেছে দৈনিক মৃত্যুও। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে তা ২০০-র নীচেই রয়েছে। মঙ্গলবার তা ১০০-র নীচে নেমেছে। ১২ মে-র পর এই প্রথম দৈনিক মৃত্যু ১০০-র নীচে নামল।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৩৫ জন। এখনও অবধি দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ১ কোটি ৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ২৪৫ জন। মোট আক্রান্তে বিশ্বে প্রথম আমেরিকা। সেখানে মোট আক্রান্ত প্রায় ২ কোটি ৬৩ লক্ষ। সে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ১ লক্ষের বেশি। ভারতের পিছনে তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলেও দৈনিক সংক্রমণ গত এক মাস ধরে বাড়ছে। সেখানে মোট আক্রান্ত ৯২ লক্ষ পার করেছে।
করোনাভাইরাস দেশে এখনও অবধি ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪৮৬ জনের প্রাণ কেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৯৪ জন। দেশে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে (৫১ হাজার ১০৯ জন)। কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে তা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। দিল্লিতে তা সাড়ে ১০ হাজার পার করেছে। পশ্চিমবঙ্গেও এই সংখ্যা ১০ হাজার পেরিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য।
এ সবের পাশাপাশি দেশে সুস্থতার হার শুরু থেকেই বেশি। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১ কোটি ৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪০৬ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৪২৩ জন। এই সুস্থতার জেরে কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। কমতে কমতে তা হয়েছে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৫৩ জন। দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৪২২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সংক্রমণের হার ১.৩১ শতাংশ।
কেরল বাদে দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। মহারাষ্ট্রে তা ২-৩ হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু কেরলে এখনও নিয়ন্ত্রণে নয় করোনা সংক্রমণ। দিল্লিতে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। গত ১০ মাসের মধ্যে সবথেকে কম আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে গত ক’দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৯ জন। এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ১৭৭ জন। যদিও এর মধ্যে ৫ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫৭৮ জন মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)