Advertisement
০৩ মে ২০২৪
National News

হিন্দু-মুসলিম হওয়ায় দম্পতিকে ঘর দিল না বেঙ্গালুরুর হোটেল!

হোটেলের একটি রুম বুক করার জন্য সেখানকার রিসেপসনিস্টকে অনুরোধ করেন হাকিম ও দিব্যা। কিন্তু, হোটেলে তাঁদের ঘর দিতে অস্বীকার করেন ওই রিসেপসনিস্ট। ওই দম্পতির অভিযোগ, তাঁদের পরিচয়পত্র দেখার পরেও হোটেলে ঘর দিতে চাননি তিনি।

শাফিক সুবেইদা হাকিম ও তাঁর স্ত্রী দিব্যা ডিভি। ছবি সৌজন্যে শফিকের ফেসবুক পেজ।

শাফিক সুবেইদা হাকিম ও তাঁর স্ত্রী দিব্যা ডিভি। ছবি সৌজন্যে শফিকের ফেসবুক পেজ।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১৫:৩২
Share: Save:

ভিন্ন ধর্মের এক দম্পতিকে ঢুকতেই দিল না বেঙ্গালুরুর এক হোটেল। শহরের সুদামা নগরের ওই হোটেলের দাবি, ‘হিন্দু ও মুসলিমরা বিয়ে করে একসঙ্গে থাকতে পারেন না।’ মঙ্গলবার এমনই অভিজ্ঞতা হল শাফিক সুবেইদা হাকিম ও তাঁর স্ত্রী দিব্যা ডিভি-র। গত কালের ওই ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন তাঁরা। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই গুগল রিভিউতে ওই হোটেলকে কম সংখ্যক রেটিং দিতে শুরু করেছেন নেটিজেনরা।

পেশায় সাংবাদিক হাকিম জানিয়েছেন, এর্নাকুলামের ল’ কলেজ থেকে পিএইচডি করছেন তাঁর স্ত্রী দিব্যা। বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ল’ স্কুলে গত কাল দুপুরে দিব্যার চাকরির ইন্টারভিউ ছিল। সে কারণেই স্ত্রীকে নিয়ে সকালবেলায় শহরে এসেছিলেন হাকিম। বেঙ্গালুরু পৌঁছে ওই হোটেলে যান তাঁরা। হোটেলের একটি রুম বুক করার জন্য সেখানকার রিসেপসনিস্টকে অনুরোধ করেন হাকিম ও দিব্যা। কিন্তু, হোটেলে তাঁদের ঘর দিতে অস্বীকার করেন ওই রিসেপসনিস্ট। তিনি নাকি প্রথমটায় বিশ্বাস করতেই পারছিলেন না, হাকিম ও দিব্যা বিবাহিত। ওই দম্পতির অভিযোগ, তাঁদের পরিচয়পত্র দেখার পরেও হোটেলে ঘর দিতে চাননি তিনি। এমনকী, পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বললেও টলানো যায়নি ওই রিসেপসনিস্টকে।

আরও পড়ুন

এ বার বিয়ের রেজিস্ট্রেশনেও আধার বাধ্যতামূলক!

কেন এমনটা করেছেন তিনি? হোটেল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও সংবাদমাধ্যমকে ওই রিসেপসনিস্ট বলেছেন, “যে সমস্ত হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে আসেন তাঁদের আমরা ঘর দিই না।” তাঁর দাবি, অহেতুক ঝামেলা এড়াতেই এ রকমের নীতি অনুসরণ করছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে বেশ অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন ওই রিসেপসনিস্ট। তিনি বলেন, “হোটেলে ঢুকে যদি আত্মহত্যা করেন ওই দম্পতি! আমি এমনটা বলছি না যে হিন্দু-মুসলিম হওয়ার জন্যই ওই দম্পতি আত্মহত্যা করতেন।” তাঁর মতে, “সাধারণত, গ্রামগঞ্জে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না। সেখানে হিন্দু পুরুষ কোনও মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করেন না বা কোনও মুসলিম পুরুষও হিন্দু মহিলাকে বিয়ে করেন না।”

হাকিম বলেন, “ওই রিসেপসনিস্ট বার বার বলে যাচ্ছিলেন, আমি মুসলিম আর দিব্যা হিন্দু হওয়ায় আমরা একসঙ্গে ঘর পাব না। নিজেদের অসহায় মনে হচ্ছিল। অত্যন্ত আশ্চর্য হয়েছিলাম। দুপুর ২টোয় দিব্যার ইন্টারভিউ। ফলে আর সময় নষ্ট না করে আমরা স্থির করি অন্য হোটেলে গিয়ে উঠব।”

আরও পড়ুন

একা মহিলা, তাই বুক করে রাখা ঘরও দেওয়া হল না

ওই রিসেপসনিস্টের দাবি, ওই দম্পতির সঙ্গে বেশি মালপত্র না থাকাতেই তাঁর সন্দেহ হয়েছিল। তিনি বলেন, “ওই ভদ্রলোকের পরিচয়পত্রে পদবি হিসেবে সাফিক লেখা ছিল আর মহিলার পরিচয়পত্রে দিব্যা। সে কারণেই আমার সন্দেহ হয়েছিল। তাই ওঁদের ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।”

তবে শুধু হাকিম-দিব্যাই নন, গত মাসে প্রায় একই ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন নূপুর সারস্বত নামে এক প্রবাসী ভারতীয় গায়িকা। বেঙ্গালুরুর বদলে তা ছিল হায়দরাবাদ শহর। একে মহিলা, তায় একা— সুরক্ষার দোহাই দিয়ে সে হোটেলে ঠাঁই হয়নি নূপুরের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE