Advertisement
E-Paper

২৬/১১ কাণ্ডে হেডলিকে ক্ষমা, জঙ্গি এ বার রাজসাক্ষী

ছিলেন চক্রী। হয়ে গেলেন রাজসাক্ষী! বৃহস্পতিবার ২৬/১১-র অন্যতম চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে রাজসাক্ষী ঘোষণা করল মুম্বইয়ের এক দায়রা আদালত।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৯

ছিলেন চক্রী। হয়ে গেলেন রাজসাক্ষী!

বৃহস্পতিবার ২৬/১১-র অন্যতম চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে রাজসাক্ষী ঘোষণা করল মুম্বইয়ের এক দায়রা আদালত। এ দিন আমেরিকার এক অজ্ঞাত জায়গা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুম্বইয়ের ওই আদালতে হাজিরা দেন লস্কর ই তইবার সদস্য এই পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত মার্কিন জঙ্গি। মুম্বই হামলায় নিজের অপরাধ কবুল করে হেডলি প্রস্তাব দেন, তাঁকে মার্জনা করা হলে তিনি রাজসাক্ষী হতে প্রস্তুত। কিছু শর্তের বিনিময়ে তাঁর প্রস্তাব মেনে নেন বিচারক জি এ সনাপ। তিনি জানান, এর আগে মার্কিন আদালতে মুম্বই হামলা নিয়ে যে সব তথ্য হেডলি দিয়েছেন, সেই তথ্য ভারতের আদালতেও দিতে হবে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য দেবেন হেডলি। মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী আবু

জুন্দলকেও এ দিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

গত কালই ইসলামাবাদে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বৈঠক হয়। সেখানে পাকিস্তানের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, মুম্বই হামলার চক্রীদের দ্রুত বিচারের জন্য সব রকম পদক্ষেপ করবে তারা। যদিও পাকিস্তান এর আগে একাধিক বার এমন আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তবে সুষমা-শরিফ বৈঠকের পর দিনই মুম্বইয়ের আদালত হেডলিকে মার্জনা করে রাজসাক্ষী ঘোষণা করায় অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়বে। মুম্বই হামলায় পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রত্যক্ষ-যোগের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ তুলে ধরবে হেডলি। যা আদতে হাত শক্ত করবে দিল্লিরই।

২৬/১১-র হামলায় ভূমিকার জন্য এই মুহূর্তে আমেরিকায় ৩৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন হেডলি। গত ১৮ নভেম্বর মুম্বইয়ের দায়রা আদালত ২৬/১১-র হামলায় হেডলিকে অভিযুক্ত ঘোষণা করে নির্দেশ দেয়, ১০ ডিসেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজির করতে হবে তাঁকে। সেই মতো এ দিন হেডলিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজির করায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

আদালতে হেডলি বলেন, ‘‘এই আদালতে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার নথি আমি পেয়েছি। আমেরিকার আদালতেও আমার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে। সেখানেও সমস্ত দোষ আমি স্বীকার করেছি।’’ এর পরেই হেডলি বলেন, ‘‘২৬/১১-র হামলায় জড়িত থাকার কথা আমি স্বীকার করছি। আদালত ক্ষমা করলে আমি রাজসাক্ষী হতে প্রস্তুত। মুম্বই হামলা সম্পর্কে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি।’’

পাক-মার্কিন লস্কর জঙ্গির এই প্রস্তাব শুনে সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকম বিচারক জি এ সনাপকে জানান, এই বিষয়ে তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এ জন্য কিছু সময় দরকার। বিচারক আধ ঘণ্টার জন্য শুনানি মুলতুবি করে দেন। শুনানি ফের শুরু হলে নিকম আদালতে জানান, হেডলির প্রস্তাবে তাঁদের আপত্তি নেই। এর পরেই আদালত ২৬/১১-র মামলায় হেডলিকে মার্জনা করে রাজসাক্ষী হওয়ার অনুমতি দেয়।

২৬/১১-র হামলায় কী ভূমিকা ছিল হেডলির? তদন্তে স্পষ্ট, মুম্বই হামলার অন্যতম মাথা হেডলি ২০০৭ থেকে ২০০৮-এর মধ্যে বার পাঁচেক মুম্বই-এ আসেন। কোন কোন জায়গায় হামলা হতে পারে, তা ঠিক করতে সেই সব জায়গার ম্যাপ, ভিডিও ফুটেজ তাঁর হাত ধরেই পৌঁছে যায় পাকিস্তানে। ২০১০ সালে হেডলির ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। তদন্তে নামে আমেরিকাও। ২০০৯-এর অক্টোবরে পাকিস্তান আসার পথে শিকাগোতে গ্রেফতার হন হেডলি।

পাকিস্তানেও মুম্বই হামলার বিচার চলছে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে মুদাসসির লকভি নামে ফরিদকোটের এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দাবি করেন, এখনও বেঁচে আজমল কসাব! এই স্কুলেই তিন বছর পড়াশোনা করেছিল ২৬/১১ মুম্বই হামলার এক মাত্র জীবিত ধৃত জঙ্গি। ২০১২ সালের নভেম্বরে কসাবের ফাঁসি হয়। আদালতের এক কর্মী বলেন, ‘‘লকভি এবং ওই শিক্ষক একই জায়গার বাসিন্দা। হতেই পারে লকভির চাপেই পুরো বিচার প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করতে এই সব কথা বলছেন ওই শিক্ষক।’’

david headley approver pardon 26 11 mumbai attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy