—ফাইল চিত্র।
জন্মতারিখ হতে হবে ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারির আগে। সে ক্ষেত্রে প্রথম দফায় করোনার টিকা মিললেও মিলতেও পারে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, টিকা দেওয়ার সময়ে পঞ্চাশ বছরের এক জন নীরোগ মানুষের চেয়ে অগ্রাধিকার পাবেন সমবয়স্ক কেউ, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে হৃদ্যন্ত্র, ফুসফুস বা কিডনির অসুখে ভুগছেন। মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ভোটার তালিকা দেখে বয়স্কদের বেছে নেওয়া হবে।
এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, দুই কোটি পুরকর্মী, পুলিশ ও আধাসেনার পরেই প্রায় ২৭ কোটি আমজনতাকে টিকা দিতে চায় কেন্দ্র। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, ব্লক থেকে রাজ্য স্তরে টিকাকরণ চলবে। ভোটার তালিকার ভিত্তিতে প্রত্যেকটি বাড়ির বয়স্কদের তালিকা বানানো হবে। কিন্তু কে গুরুতর অসুস্থ, ওই তালিকা থেকে তা বোঝা অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে দু’টি বিকল্প পথ ভেবেছে কেন্দ্র।
প্রথমটি হল, বাড়ি বাড়ি ঘুরে কারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষেধক পাওয়ার যোগ্য, সেই তালিকা বানানো। কিন্তু তাতেও ভুল তথ্য সংকলিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পথটি হল, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী যাঁরা পঞ্চাশোর্ধ্ব, তাঁদের সকলকেই গণ-টিকাকরণের আওতায় আনা। এই বয়সের মানুষের সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ। শেষ পর্যন্ত কোন পথে এগোনো হবে, তা ঠিক হয়নি। সূত্রের মতে, স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ শুরুর পরে সব দিক বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পঞ্চাশ বছরের নীচে বয়স, কিন্তু গুরুতর রোগে ভুগছেন— এমন নাগরিকেরাও টিকা পাবেন। তবে ধাপে ধাপে।
টিকা: কাকে, কখন
• প্রথম ধাপে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, দ্বিতীয়
ধাপে দু’কোটি পুরকর্মী, পুলিশ ও আধাসেনার টিকাকরণ হবে। নাম পাঠাবে রাজ্য সরকার ও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক।
• তৃতীয় ধাপে পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়সি ও ‘ক্রনিক’ রোগে আক্রান্তদের টিকাকরণ হবে। তথ্য সংগ্রহ করা হবে লোকসভা ও বিধানসভার ভোটার তালিকা থেকে।
• ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারির আগে যাঁরা জন্মেছেন, টিকা দেওয়ার প্রশ্নে তাঁদের অগ্রাধিকার। তবে যাঁরা অন্যান্য রোগে ভুগছেন, তাঁরা অবশ্যই নীরোগ মানুষদের চেয়ে আগে টিকা পাবেন।
• পঞ্চাশ বছরের নীচে, কিন্তু ‘ক্রনিক’ রোগের শিকার যাঁরা, তাঁদেরও তৃতীয় ধাপে টিকাকরণের আওতায় আনা হচ্ছে।
• টিকাকরণের দিন
ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার।
• নির্বাচন প্রক্রিয়া যে ভাবে হয়, সে ভাবেই হবে টিকাকরণ।
• টিকাকরণ সকাল
৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত হবে।
• প্রতিটি রাজ্যের হেল্পলাইন নম্বর হবে ১০৪।
স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ শুরুর আগেই ‘কোউইন’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কারা টিকা পাচ্ছেন, তাঁদের টিকাকরণ কেন্দ্র কোনটি, পরবর্তী টিকা বা বুস্টার ডোজ় লাগলে তা কবে দিতে হবে, সে সবই অ্যাপে থাকবে। বর্ষীয়ান মানুষেরা টিকা নিতে ইচ্ছুক হলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে নাম লেখাতে পারবেন। তবে বয়সের প্রমাণপত্র হিসেবে আধার বা ভোটার কার্ডের মতো যে কোনও একটি পরিচয়পত্র আপলোড করতে হবে। এ ছাড়া দেশ জুড়ে কিয়স্ক খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানেও নাম লেখানো যাবে। ‘ক্রনিক’ রোগে ভুগলে তার শংসাপত্র দেখাতে হতে পারে। টিকাকরণের নির্ধারিত দিনে যাঁদের নাম তালিকায় থাকবে, তাঁরাই একমাত্র টিকা পাবেন।
আগামী মাস থেকে গণ-টিকাকরণ শুরু করতে চাইছে কেন্দ্র। রাজ্যগুলির জন্য একাধিক নির্দেশিকা জারি হলেও টিকা আনা ও প্রয়োগের খরচ কে দেবে, তা নিয়ে জট খোলেনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চ গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই) মনে করছে, প্রথম দফার টিকাকরণে ১০ হাজার থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে ভারতের। বিহার ও ভোটমুখী কেরল তাদের রাজ্যের মানুষকে নিখরচায় টিকা দেবে বলেছে। অর্থাৎ টিকাকরণের পুরো খরচ বহন করবে ওই দুই রাজ্য। কিন্তু অন্য রাজ্যগুলির থেকে কেন্দ্র এ বাবদ অর্থ নেবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তেমনই স্পষ্ট নয়, কোন রাজ্যকে কত টিকা দেবে কেন্দ্র। টিকা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান ভি কে পলের কথায়, ‘‘যে রাজ্য যত টিকা চাইবে, তাদের তত টিকা মঞ্জুর
করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy