ক্ষতি নয়, বরং যাঁরা করোনার প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের হঠাৎ করে হৃদ্যন্ত্র বিকল হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে গিয়েছে বলে দাবি করল দিল্লির জিবি পন্থ হাসপাতাল। গত কালই দু’টি গবেষণার ভিত্তিতে ভারতে তৈরি টিকাগুলিকে ক্লিনচিট দেয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
শরীরে করোনার প্রতিষেধক বিশেষ করে হৃদ্যন্ত্রের উপরে কী প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে দিল্লি এমসের ধাঁচেই গবেষণা চালায় জিবি পন্থ হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগও। ওই বিভাগের চিকিৎসক মোহিত গুপ্তের দাবি, ‘‘হৃদ্রোগ হয়েছে, এমন প্রায় ১৬০০ জনের উপরে ওই পরীক্ষা চালানো হয়। এঁদের অনেকে টিকা নিয়েছিলেন, অনেকে নেননি।’’ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের হৃদ্যন্ত্রের বিকল হওয়ার আশঙ্কা, যাঁরা প্রতিষেধক নেননি, তাঁদের থেকে অনেক কম। যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে হঠাৎ মৃত্যুর সংখ্যাও কম। মোহিত বলেন, ‘‘করোনার টিকা ক্ষতিহীন। তা সুরক্ষাকবচের কাজ করেছে।’’ তাঁর দাবি, কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড গ্রহীতা, উভয়ের উপরেই কাজ করে গবেষণায় একই ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে।
এ দেশে দ্বিতীয় দফার পরে টিকা দেওয়া কার্যত বন্ধ। করোনার টিকার তৃতীয় ডোজ় নিয়েছেন খুব অল্প সংখ্যক মানুষ। তার পিছনে টিকা নিয়ে তৈরি সংশয় অনেকাংশে দায়ী। আজ দিল্লি এমসের কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক সঞ্জয় রাই বলেন, ‘‘আমেরিকার মতো বহু দেশ তাদের জনগণকে চতুর্থ ডোজ় পর্যন্ত দিয়েছে।’’ ফি-বছর করোনার নতুন প্রজাতি চরিত্র বদল করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সঞ্জয়ের বক্তব্য, ‘‘সে কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি ছ’মাস অন্তর করোনার টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।’’
সম্প্রতি কর্নাটকের হাসনে একাধিক ব্যক্তির হৃদ্রোগে মৃত্যুর পরে ভারতে তৈরি টিকার গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সে রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। কাল আইসিএমআর ভারতীয় টিকাকে ছাড়পত্র দেয়। আজ বায়োকন সংস্থার কর্ণধার কিরণ মজুমদার শ’ বলেন, ‘‘জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র পেলেও ভারতীয় টিকা সমস্ত ধরনের নিয়ম ও আন্তর্জাতিক
গুণমান বজায় রেখেই তৈরি। ফলে তড়িঘড়ি সেগুলি উৎপাদনে পাঠানো হয়েছে, এমন মন্তব্যে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। কিছু মানুষের শরীরে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও, ওই টিকাই কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)