Advertisement
E-Paper

নারদ-কাণ্ডে তৃণমূল-বিজেপিকে নিশানা করে প্রচারে যাচ্ছে সিপিএম

এক ঢিলে দুই পাখি! ঘুষ বিতর্ককে হাতিয়ার করে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করে প্রচারে নামবে সিপিএম। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ‘গোপন আঁতাত’-এর অভিযোগই হবে সেই প্রচারের মূলমন্ত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৬ ২১:৩১

এক ঢিলে দুই পাখি!

ঘুষ বিতর্ককে হাতিয়ার করে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করে প্রচারে নামবে সিপিএম। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ‘গোপন আঁতাত’-এর অভিযোগই হবে সেই প্রচারের মূলমন্ত্র।

সিপিএমের নেতারা প্রচারে বলবেন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দুর্নীতিতে গলা অবধি নিমজ্জিত, তা গোপন ক্যামেরায় তোলা ঘুষ-কাণ্ড থেকে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআইয়ের তদন্তে ঢিলে দিয়ে এই তৃণমূলকেই সুবিধা করে দিয়েছে বিজেপি তথা মোদী সরকার। তার বিনিময়ে সংসদে মোদী সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার গোপন ভি়ডিওয় ঘুষ-কাণ্ডেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে না। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি তাই বারবার তাই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কেন কেন্দ্রীয় সরকার তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে না? দেখে মনে হচ্ছে, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ম্যাচ-ফিক্সিং হয়ে গিয়েছে।’’

আজ রাজ্যসভায় আধার বিল নিয়ে ভোটাভুটির পর সিপিএম নতুন করে ‘গোপন আঁতাত’-এর অভিযোগ তোলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএম ও অন্য বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে আধার বিলে সংশোধনী এনেছে। কিন্তু সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে আধার বিলের বিরুদ্ধে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল ধর্না দিলেও রাজ্যসভায় সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাভুটিতে যায়নি তৃণমূল। তার আগেই তৃণমূল ওয়াক-আউট করে গিয়েছে। তৃণমূল বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে সরকারেরই সুবিধা করে দিয়েছে বলে সিপিএম নেতাদের দাবি।

এই প্রচারে যাওয়ার পিছনে সিপিএমের মূল উদ্দেশ্য হল, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মেরুকরণ রোখা। তৃণমূল এখনও পর্যন্ত ঘুষ-বিতর্কে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি সকলকে একইসঙ্গে আক্রমণ করছে। আজ সংসদ চত্বরে ধর্নার স্লোগানেও তৃণমূলের সাংসদরা অমিত শাহ থেকে সীতারাম ইয়েচুরির মতো নেতাদের বাংলায় এসে লড়ার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, আগামী দিনে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে আরও সুর চড়াবে। অন্তত প্রকাশ্যে। কারণ আজ স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ঘুষ-কাণ্ডের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য লোকসভার এথিক্স বা নীতি কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। লালকৃষ্ণ আডবাণীর নেতৃত্বাধীন সেই কমিটিতে বিজেপি সাংসদদেরই পাল্লা ভারি। ইতিমধ্যেই স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল। অন্য দিকে, ঘুষ-কাণ্ডে সিবিআই এবং ইডি-র তদন্ত চেয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এই ধরনের কোনও তদন্ত হলে তখন তৃণমূল পুরো বিষয়টিকে বিজেপির ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরে প্রচারে চলে যেতে পারে।

সেখানেই ভোটের মেরুকরণের আশঙ্কা সীতারাম ইয়েচুরিদের। তাঁদের যুক্তি, তৃণমূল এক দিকে বিজেপিকে আক্রমণ করে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করবে। অন্য দিকে বিজেপি-ও সেই সুযোগে হিন্দু ভোট সংগঠিত করার চেষ্টা চালাবে। তাতে দু’পক্ষই লাভবান হবে। দু’পক্ষের গোপন আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেই ভোটের মেরুকরণ রোখার কৌশল নিতে চাইছে সিপিএম।

সিপিএম নেতাদের যুক্তি, গোপন ভি়ডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি-র নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। বলেছেন, সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি লেখা হয়েছে। কিন্তু গত দেড় বছরে সারদা দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের গতি কমে গেল কেন, বিজেপিকেই তার জবাব দিতে হবে। ইয়েচুরি তাই লাগাতার সাংসদদের তৃণমূল-বিজেপির ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। বার বার এই ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’-এর অভিযোগ ওঠায় আজ বিজেপিকেও এর জবাব দিতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ পাল্টা জবাবে বলেছেন, এইধরনের কোনও ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ নেই। সংসদের রেকর্ড থেকে সিপিএমের এইসব অভিযোগ মুছে দেওয়ারও দাবি তোলেন তিনি। ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘সারদা থেকে নারদা—এই দুর্নীতির টাকাতেই গুণ্ডাবাহিনী চালাচ্ছে তৃণমূল। এ সবের তদন্তে ঢিলে দিয়ে বিজেপিকে সাহায্য করছে বিজেপি।’’

Assembly Election 2016 Narada CPM campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy