পথকুকুরদের নির্বীজকরণ কর্মসূচি শুরু করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল কলকাতা পুরসভা। সেই অনুযায়ী ডিসেম্বর মাস থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় এই কর্মসূচি কার্যকর হয়েছে। তবে কাজ শুরু করার পর পথকুকুরদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নজরে আসায়, সেই কর্মসূচি রূপায়ণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল পুরসভা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনও পথকুকুরকে সরাসরি নির্বীজকরণ না করে আগে তাকে ডগ পাউন্ডে এনে অন্তত সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এই সময়ে কুকুরটির শারীরিক অবস্থা, সংক্রমণজনিত রোগ কিংবা অন্য কোনও স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পর্যবেক্ষণ শেষে কুকুরটি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলে তবেই তার নির্বীজকরণ করা হবে। অস্ত্রোপচারের পর নির্দিষ্ট সময় ধরে তাকে সুস্থ করে তোলার পর আবার তার পুরনো এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
পুরসভার আধিকারিকদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই ধরা পড়ছে যে, উদ্ধার করা পথকুকুরেরা অপুষ্টি, চর্মরোগ বা সংক্রমণে ভুগছে। এই ধরনের কুকুরদের ক্ষেত্রে নির্বীজকরণ স্থগিত রেখে আরও কিছু দিন ডগ পাউন্ডেই চিকিৎসা ও পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হবে। এ কাজে কলকাতা পুরসভাকে সহযোগিতা করবে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতর। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই পথকুকুর ও নাগরিক— উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই কর্মসূচি জোরদার করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফে নির্বীজকরণ কর্মসূচির জন্য একটি বিশেষ তহবিল দেওয়া হলেও, এ বার কলকাতা পুরনিগম নিজেদের খরচেই পুরো প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন:
যদিও পুরসভার কাছে কলকাতায় মোট পথকুকুরের নির্দিষ্ট সরকারি সংখ্যা নেই, বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী শহরে বর্তমানে ৮৪ হাজারেরও বেশি পথকুকুর রয়েছে বলে অনুমান। পুরসভার আশা, পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যসম্মত নির্বীজকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে এক দিকে যেমন পথকুকুরদের জীবনমান উন্নত হবে, তেমনই অন্য দিকে শহরবাসীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।