প্রতীকী ছবি।
বিরোধী শিবিরের সবাই কংগ্রেসকে নিশানা করলেও পাশে থাকছে শুধু সিপিএম। আরও স্পষ্ট করে বললে,বঙ্গ সিপিএম।
গোয়ায় কংগ্রেস নেতাদের টেনে নিজেদের দলে নিয়ে আসা তৃণমূল বলছে, কংগ্রেস বিজেপির কাছে হেরেই চলেছে। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অর্থ ভোট নষ্ট করা। কেন্দ্রে, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সঙ্গী এনসিপি-র শরদ পওয়ার বলছেন, কংগ্রেস জমি হারিয়েছে, তবু জমিদারি মনোভাব হারায়নি। বিহারে কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে নারাজ আরজেডি-র লালুপ্রসাদের প্রশ্ন, কংগ্রেসকে আসন ছাড়ব কেন? জামানাত বাজেয়াপ্ত করার জন্য? মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের শরিক শিবসেনা বলছে, কংগ্রেসের মাথায় কেউ না থাকলে উদভ্রান্ত দশা কাটার নয়। কেউই কংগ্রেসকে বিজেপির বিকল্প হিসেবে জমি ছাড়তে রাজি নয়।
এক মাত্র সিপিএম নেতৃত্ব আশা করছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরের বাকি দলগুলো যে যা-ই বলুক, নির্বাচনের পরে উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে বিরোধী জোট ঠিকই দানা বাঁধবে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “জরুরি অবস্থার পরে কংগ্রেস নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে জনতা পার্টি তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৬-এ নির্বাচনের পরেই সংযুক্ত মোর্চা তৈরি হয়েছিল। একই ভাবে ২০০৪-এও নির্বাচনের পরেই ইউপিএ তৈরি হয়।”
রবিবার শেষ হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরি সওয়াল করেছেন, কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কেরল, অন্ধ্র, তেলঙ্গানার নেতারা কংগ্রেসকে সঙ্গে নিলে হিতে বিপরীত হচ্ছে বলে যুক্তি দিলেও ইয়েচুরির বক্তব্য, রাজনৈতিক লাইন বদলের প্রশ্ন নেই। তবে আজ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রাজ্য স্তরে কোথায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হবে, কোথায় হবে না, তা রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করবেন।
এই প্রশ্নেই পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতাদের অবস্থান দেখে কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি রাজ্যের নেতারা স্তম্ভিত। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাঁতের রাস্তা খোলা থাকতেই পারে। কিন্তু আলিমুদ্দিনের নেতারা যে ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটকেই একমাত্র পন্থা হিসেবে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন, তা আর কেউ করছে না। কেরলের এক সিপিএম নেতা বলেন, “কেরলে তো রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সাংসদ। সেখানে বিজেপির মোকাবিলায় আমরা কংগ্রেসের সাহায্য চাইছি না। যদি বলেন কেরলে বিজেপি শক্তিশালী নয়, তা হলে বলব, ত্রিপুরায় ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে তো মানিক সরকার কংগ্রেসের হাত ধরতে চাইছেন না।”
গত বিধানসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাঁত করেও সিপিএম বিধানসভায় একটিও আসন জেতেনি। কংগ্রেসের হাতও শূন্য। তার পরে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ভেবেছিলেন, বঙ্গ ব্রিগেডের কংগ্রেস মোহ বুঝি কাটবে। কিন্তু এই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাঁতের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। পলিটবুরোর এক নেতা বলেন, “এই মোহের কারণ বোঝা মুশকিল। বিধানসভায় ভবানীপুর আসনে সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী ৫,২১১টি ভোট পেয়েছিলেন। উপনির্বাচনে কংগ্রেসকে ছাড়াই সিপিএম একা লড়ে ৪,২২৬ ভোট পেয়েছে। এই ৯৮৫টা বেশি ভোট পাওয়ার জন্য কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার প্রয়োজন রয়েছে?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy