Advertisement
E-Paper

উঠল কার্ফু, হুরিয়তের সঙ্গে কথা নিয়ে সংশয়

অবশেষে স্বস্তি। ৫২ দিনের মাথায় কার্ফু উঠে গেল কাশ্মীরের অধিকাংশ এলাকা থেকে। তবে নিরাপত্তার কারণে ১৪৪ ধারা ও সামান্য কিছু এলাকায় এখনও কার্ফু জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১১
কার্ফু উঠলেও থামেনি বিক্ষোভ। সামাল দিতে পুলিশের অস্ত্র এ বার গুলতি। সোমবার শ্রীনগরে। ছবি: রয়টার্স

কার্ফু উঠলেও থামেনি বিক্ষোভ। সামাল দিতে পুলিশের অস্ত্র এ বার গুলতি। সোমবার শ্রীনগরে। ছবি: রয়টার্স

অবশেষে স্বস্তি। ৫২ দিনের মাথায় কার্ফু উঠে গেল কাশ্মীরের অধিকাংশ এলাকা থেকে। তবে নিরাপত্তার কারণে ১৪৪ ধারা ও সামান্য কিছু এলাকায় এখনও কার্ফু জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

একই সঙ্গে উপত্যকার মন বুঝতে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে কাশ্মীর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রকাশ্যে সকলের সঙ্গে বৈঠকে বসার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি হুরিয়ত নেতারাও যাতে আলোচনায় সামিল হন তার জন্য তলে তলে চেষ্টা শুরু করেছে প্রশাসন। কেন্দ্র জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের কয়েক জন। কেন্দ্রের আশঙ্কা, হুরিয়ত নেতাদের পাশে না পেলে ফের অশান্ত হয়ে উঠবে উপত্যকা। প্রকাশ্যে না হলেও দরকারে যাতে গোপনেও হুরিয়তের সঙ্গে কথা বলা যায় তার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে মুফতি সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে এনআইএ হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির ছেলে নইমকে সমন পাঠানোয় নতুন জট তৈরি হয়েছে। হুরিয়তের অভিযোগ, ‘‘কাশ্মীরিদের মানসিক ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। যাতে স্বাধীনতার এই লড়াই থামাতে বাধ্য হয় তারা।’’ হুরিয়ত এক বিবৃতিতে যৌথ কমর্সূচি মেনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ডাক দিয়েছে কাশ্মীরিদের উদ্দেশে। দেওয়া হয়েছে বয়কটের ডাকও। এই অবস্থায় হুরিয়ত আদৌ আলোচনায় আসবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরপরই বিক্ষোভ সামাল দিতে জারি হয়েছিল কার্ফু। কিন্তু তার মধ্যেও অন্তত ৭০ জন নিহত ও হাজার খানেক মানুষ জখম হন সংঘর্ষে। শুরু হয় কৌশল বদলের ভাবনা। গত শনিবার দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। সূত্রের খবর, তখনই মেহবুবা প্রধানমন্ত্রীকে জানান আগামী সোমবার থেকে কার্ফু তোলার বিষয়ে ভাবছে রাজ্য প্রশাসন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পরিস্থিতি বিস্তারিত ভাবে জেনে তাতে সম্মতি দেয় নয়াদিল্লি। এর পর গত কাল প্রশাসন বার্তা দেয়, আজ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে কার্ফু। আজ সকাল থেকে পুলওয়ামা জেলার পাম্পোর ও পুরনো শ্রীনগরের দু’টি থানা ছাড়া বাকি সর্বত্র কার্ফু তুলে নেওয়া হয়। উপত্যকার বহু এলাকাতেই অবশ্য জীবনযাত্রা এ দিনও কার্যত অচল ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকা ধর্মঘটে। বন্ধ হয়নি বিক্ষোভও। কেন্দ্রীয় সরকারের কমিটির ছররার বদলে লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহারের উপরে জোর দিলেও, নিরপত্তাবাহিনী আজ জানিয়েছে পরিস্থিতি চরমে উঠলে, ওই বন্দুকের ব্যবহার তাদের করতেই হবে। এ দিন ছররার বদলে গুলতি দিয়ে বিক্ষোভ সামলাতে দেখা গিয়েছে তাদের।

কার্ফু প্রত্যাহার হতেই আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজনাথের নেতৃত্বে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর সব দলের প্রতিনিধিরা শ্রীনগর যাবেন। সরকারের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক মনে করলেও করলেও, কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের দাবি, ‘‘অনেক দেরি হল। বিরোধীদের কথা মেনে আগেই সর্বদলীয় প্রতিনিধিমণ্ডলী পাঠানো যেত। তাতে আগেই শান্ত হয়ে আসত পরিস্থিতি।’’

যদিও কেন্দ্রের বক্তব্য, জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন গত দশ দিনে প্রায় জনা চারশো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বিক্ষোভকারীদের মদত দেওয়ার অভিযোগে। কেন্দ্রের দাবি, ওই ব্যক্তিরাই পিছন থেকে এত দিন অশান্তি পাকানোর জন্য মদত দিয়ে আসছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘ধীরে ধীরে এদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর ফলেই গত দশ দিনে ক্রমশ শান্ত হয়ে এসেছে উপত্যকা। তোলা গিয়েছে কার্ফু।’’

Curfew major Kashmir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy