সাইবার প্রতারণার চক্রের কথা প্রকাশ্যে এল উত্তরপ্রদেশে! লখনউয়ে সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)-এর নাম করে লখনউয়ের একের পর এক বাসিন্দার থেকে হাতিয়ে নেওয়া হল মোট ৪৯ লক্ষ টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে লখনউয়ের মহানগর এলাকায়। আশা সিংহ নামে এক মহিলাকে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে ৩৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারকেরা। অভিযোগ, প্রতারকেরা নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং এটিএস-এর কর্তা হিসেবে। ওই মহিলাকে ভুয়ো গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠিয়ে টানা ১৪ দিন ধরে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ওই ক’দিন হোয়াট্সঅ্যাপে লাগাতার ফোন করা হত আশাকে। প্রতিটি ফোন আসত ‘এটিএস বিভাগ’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে। এর পর ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা চাইতে শুরু করেন ‘তদন্তকারী আধিকারিকেরা’। সে কথা বিশ্বাস করে আলাদা আলাদা একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েও দেন আশা।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে লখনউয়েরই গোমতীনগর এলাকার বাসিন্দা রাহুলকুমার গুপ্তর সঙ্গে। যদিও এ বার ভিন্ন গল্প ফাঁদেন প্রতারকেরা। দ্বিতীয় ঘটনাটিতে প্রতারণা করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘টেলিগ্রাম’ মারফত। অল্প বিনিয়োগের পরিবর্তে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে বিপুল অঙ্কের লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, ‘দময়ন্তী১২৩৪৫৬’ নামের একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে রাহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতারকেরা। তাঁকে বলা হয়, প্রথম দফায় মাত্র ৭,৯৯৯ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এর পর থেকে প্রতি দিন একটু একটু করে টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ ভাবে ১৫ দিনে মোট ১৫ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে পাঠান রাহুল। কিন্তু জমানো টাকা তুলতে চাইলে তাঁকে বলা হয়, ‘ক্রেডিট স্কোর’ ১০০-এ উন্নীত করার জন্য আগে আরও ৮ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে তাঁকে। তাতে রাজি না হয়ে যুবক টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে ‘ব্লক’ করে দেন প্রতারকেরা। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন রাহুল।
এ বিষয়ে সাইবার থানার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ব্রিজেশ যাদব বলেন, ‘‘দুই মামলায় আলাদা আলাদা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। পুলিশ কল ডিটেল্স এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের সূত্র ধরে অভিযুক্তদের খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ দুই ঘটনায় একই প্রতারণা চক্রের যোগ রয়েছে কি না, সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।