প্রতি বছর ঝাঁক বেঁধে আসে ওরা। লাখো অলিভ রিডলে কচ্ছপে ভরে যায় ওড়িশার গঞ্জাম জেলার ঋষিকুল্যা সৈকত। কিন্তু এ বার তারা ভিড় করেনি এখানে। তাতেই হতচকিত বন দফতরের আধিকারিকেরা। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ওরা আগেই আন্দাজ পেয়েছিল, ফণী আসছে!
শুক্রবার যে ওড়িশায় ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ ফণী আছড়ে পড়বে, তা কিছু দিন আগে থেকেই পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। সেই মতো ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। ‘‘কিন্তু কিছু প্রাণীর পূর্বাভাসের প্রয়োজন পড়ে না,’’ বলছেন অনেকেই। আইএফএস অফিসার প্রবীণ কাসওয়ান যেমন টুইট করেছেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার কিন্তু! অলিভ রিডলে এ বছর আর বার্ষিক ‘মাস নেস্টিং’-এ আসেনি ঋষিকুল্যা সৈকতে। ঝড় আসছে কি না জানতে সব প্রাণীর আবহাওয়ার পূর্বাভাস লাগে না। কিছু প্রাণী নিজেরাই বিপর্যয়ের আভাস পায়।’’
প্রতি বছর নভেম্বর থেকে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ঋষিকুল্যা সৈকতে ডিম পাড়তে আসে অলিভ রিডলে। বালির এক ফুট গভীরে কোনাকৃতি বাসা তৈরি করে ডিম পাড়ে তারা। তার পরে সমুদ্রে ফিরে যায়। গত বছর ঋষিকুল্যায় আসা এমন অলিভ রিডলের সংখ্যাটা ছিল কমপক্ষে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার। আর এ বার সেটা তিন হাজারেরও কম। যদিও ওড়িশার কেন্দ্রাপড়া জেলার গহিরমাতা সৈকতে অলিভ রিডলে এসেছে।
বন দফতর অবশ্য জানিয়েছে, অলিভ রিডলে না আসার কারণ কী, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। ২০০২, ২০০৭ এবং ২০১৬-তেও তারা আসেনি। ওড়িশার সৈকত অলিভ রিডলের সব চেয়ে বড় ‘মাস নেস্টিং সাইট’। তার পরে মেক্সিকো এবং কোস্টা রিকার সৈকত। ১৯৯১ সালে এক সপ্তাহে অন্তত ৬ লাখ কচ্ছপ বাসা বেঁধেছিল ওড়িশায়। বিপন্নপ্রায় প্রাণীটির এ বারে ঋষিকুল্যায় না আসার পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় সংরক্ষণবিদেরা। উত্তর খুঁজছেন তাঁরা।