দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স থেকে তথ্য উদ্ধার করা গিয়েছে। সেই তথ্য ডাউনলোডও করা হয়েছে। এ বার তা পরীক্ষা করে দেখছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা (এএআইবি)। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের ব্ল্যাক বক্স বিদেশে পাঠানো হয়নি। দেশেই পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
গত ১২ জুন অহমদাবাদের মেঘানিনগরে লোকালয়ে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। তার গন্তব্য ছিল গ্যাটউইক। উড়ানের পাঁচ মিনিট পরেই ভেঙে পড়ে সেটি। বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৩ জুন বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার্স (সিভিআর) উদ্ধার করা হয়েছে। যে বাড়িতে বিমানটি ভেঙে পড়েছিল, তার ছাদ থেকে উদ্ধার হয়েছিল সিভিআর। ১৬ জুন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর)। বিমানের ব্ল্যাক বক্সের এই দু’টি অংশ থাকে। এগুলি থেকেই মেলে উড়ানের তথ্য। কোন পথে, কত উচ্চতায় উড়েছিল বিমান, কত গতি ছিল, ইঞ্জিনের অবস্থা কী ছিল, তা এফডিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়। সিভিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, উড়ানের সময় ককপিটে পাইলটদের মধ্যে কী কথোপকথন চলেছিল, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, কর্মীরা বা যাত্রীরা কী কথা বলেছিলেন।
কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, ২৪ জুন, মঙ্গলবার বায়ুসেনার বিমানে কড়া নিরাপত্তায় ব্ল্যাক বক্স দু’টি অহমদাবাদ থেকে দিল্লিতে আনা হয়েছে। ওই দিনই দুপুর ২টো নাগাদ দিল্লিতে এএআইবির দফতরে প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি (সামনের) নিয়ে যান তদন্তকারী সংস্থার ডিজি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ এএআইবির দফতরে পৌঁছোয় দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স (পিছনের)। মঙ্গলবার রাতেই ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধারের কাজ শুরু করে এএআইবির প্রযুক্তিবিদের দল। নেতৃত্বে রয়েছেন ডিজি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিমানের সামনের ব্ল্যাক বক্সের ক্র্যাশ প্রোটেকশন মডিউল (সিপিএম) উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার মেমরি মডিউল উদ্ধার করা হয়েছে ব্ল্যাক বক্স থেকে। সেই তথ্য এএআইবি গবেষণাগারে ডাউনলোড করা হয়েছে। সিভিআর এবং এফডিআরের তথ্য এখন পরীক্ষানিরীক্ষা করা চলছে। মনে করা হচ্ছে, সেই পরীক্ষা শেষ হলে জানা যাবে দুর্ঘটনার কারণ। বিমানটি ভেঙে পড়ার আগের মুহূর্তে ঠিক কী ঘটেছিল, তা-ও জানা যাবে। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, আইন মেনেই তথ্য উদ্ধার করে পরীক্ষা চলছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে সওয়ার ছিলেন ২৪২ জন। তাঁদের মধ্যে ২৪১ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে। বিমান যেখানে ভেঙে পড়েছিল, সেখানে আরও ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।