Advertisement
E-Paper

অসমের জোড়া বিষ-মদ কাণ্ডে মৃত বেড়ে ১০২

অসমের গোলাঘাট ও যোরহাটে বিষ মদে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আজ রাত পর্যন্ত ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুই জেলা মিলিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনের সংখ্যা ৩৪১ জন।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১২
স্বজনহারা: হাসপাতালে বিষ-মদ কাণ্ডে মৃতের পরিজন। শনিবার গোলাঘাটে। পিটিআই

স্বজনহারা: হাসপাতালে বিষ-মদ কাণ্ডে মৃতের পরিজন। শনিবার গোলাঘাটে। পিটিআই

অসমের গোলাঘাট ও যোরহাটে বিষ মদে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আজ রাত পর্যন্ত ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুই জেলা মিলিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনের সংখ্যা ৩৪১ জন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতদের মধ্যে যোরহাট মেডিক্যাল কলেজে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভর্তি রয়েছেন ২২১ জন। গোলাঘাট সিভিল হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা ৫৯। ভর্তি রয়েছেন ১১১। এ ছাড়াও তিতাবর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৮ জন। যাঁরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের অধিকাংশের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আশঙ্কা মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিব্রুগড় ও তেজপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়তি চিকিৎসকদের এই দুই জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে।

আজ সকালে গুয়াহাটিতে জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। হাজির ছিলেন মুখ্য সচিব ও ডিজিপি। কী ভাবে একই দিনে দুই জেলায় বিভিন্ন চা বাগানের এত জন মানুষ বিষ মদের শিকার হলেন, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। জানান, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হবে। উজানি অসমের বিভাগীয় কমিশনার জুলি সোনোয়াল ঘটনার প্রশাসনিক তদন্ত করছেন। পুলিশ পর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছেন ডিআইজি দিলীপ দে। তিনি আজ হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের সঙ্গেও কথা বলেন। মৃতদের পরিবারপিছু দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করেছে সরকার।

গত রাতেই যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। আজ তিনি ও সাংসদ কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা গোলাঘাটে যান। সেখানে মন্ত্রী জানান, অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। প্রকৃত অসুস্থদেরই ভর্তি নেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে হাজির বাগান কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা মন্ত্রীকে জানান, বাগানগুলিতে মদের পাশাপাশি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নেশা করাও খুব বেড়েছে।

আরও পড়ুন: কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত মালদহের ৯​

আজ সকালে গোলাঘাটের শালমারা বাগানে মৃতদের চিতা পর পর সাজানো হয়। কংগ্রেসের বিধায়ক রকিবুল হুসেন, রূপজ্যোতি কুর্মী, অজন্ত নেওগ ও খুমটাইয়ের প্রাক্তন বিধায়ক বিস্মিতা গগৈরা সেখানে হাজির হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উপস্থিত মানুষ মৃত্যু নিয়ে ‘রাজনীতি’ করার বিরোধিতা করে। বাধ্য হয়ে কংগ্রেস প্রতিনিধিরা শ্মশান থেকে চলে যান। বিভিন্ন স্থানে আবগারি মন্ত্রী পরিমল শুক্ল বৈদ্যের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।

রাজ্য জুড়ে দেশি মদের ভাটি বন্ধ করা হচ্ছে। রাজ্যে ‘লালি গুড়’ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মদ তৈরিতে ব্যবহৃত এই লালি গুড়ের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। নুমালিগড়, মুরফুলনি, শ্যামরায়পুর, নাহরবাড়ি-সহ বিভিন্ন স্থানে চা বাগান লাগোয়া মদের ভাটিগুলি ইতিমধ্যেই ভাঙা হয়েছে। পুলিশ গোলাঘাট ও যোরহাট থেকে তিন মদ বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে। গোলাঘাটের এসপি পুষ্পরাজ সিংহ জানান, শালমারা বাগানে সঞ্জু ওরাং ও তার মা দ্রৌপদীর বিক্রি করা মদ খেয়ে অনেকে মারা গিয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ওই দু’জনেরও। সে কারণে মদ কোথা থেকে আনা হয়েছিল তা জানার কোনও উপায় নেই।

জেলাশাসক জানান, গত ২০ দিন ধরে ওই এলাকায় মদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রসার অভিযান চলেছিল। কিন্তু চা শ্রমিকদের মদ্যপানে রাশ টানা যায়নি।

Death Assam Adulterated Liquor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy