জ়ুবিন গর্গের মৃত্যুর ঘটনায় স্বচ্ছ করোনারের তদন্তের দাবিতে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াংয়ের উদ্দেশে চিঠি পাঠালেন অসমের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া। তিনি জ়ুবিনের মৃত্যুকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, জ়ুবিন উত্তর-পূর্ব তথা ভারতের সাংস্কৃতিক দূত হিসেবে সে দেশে গিয়েছিলেন। ভারত-সিঙ্গাপুর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজন করেছিল অনুষ্ঠানটির। তাই বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
জ়ুবিনের মৃগী থাকায় চিকিৎসকরা তাঁকে সর্বদা জল ও আগুন থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন। এই তথ্য উৎসবের ব্যবস্থাপক ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে জানতেন। তবুও তাঁরা একটি প্রমোদতরীতে পার্টির আয়োজন করেন, যেখানে কোনও চিকিৎসা সহায়তা বা পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। সিঙ্গাপুর পুলিশ বিবৃতি দিয়ে দাবি করছে, তাদের প্রাথমিক তদন্তে কোনও অপরধামূলক ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু শইকিয়া বলেন, “ভিডিয়ো প্রমাণে দেখা যাচ্ছে চিকিৎসকের নিষেধ সত্ত্বেও তাঁকে বারবার সমুদ্রে নামতে উৎসাহ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বার তাঁর লাইফ জ্যাকেটও ছিল না। এ সবই গুরুতর অবহেলার প্রমাণ।’’ শইকিয়ার দাবি, সিঙ্গাপুরের করোনার্স আইন ২০১০ অনুযায়ী ওই মৃত্যুর সম্পূর্ণ স্বাধীন তদন্ত হোক যেখানে তাঁর অসুস্থতার ইতিহাস, চিকিৎসার রেকর্ড. ফরেন্সিক ও সাক্ষ্য প্রমাণ সব বিবেচনা করা হবে। উল্লেখ্য জ়ুবিনের মৃত্যুর তদন্তে গড়া বিশেষ তদন্ত দল সোমবার সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সেখানকার তদন্তকারীদের সঙ্গে তাদের বৈঠক। শইকিয়া দাবি করেন, জ়ুবিনের মৃত্যু অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হওয়া মৃত্যু।
সিঙ্গাপুরে গিয়ে সেখানকার পুলিশের কাছে জ়ুবিনের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে এফআইআর দায়ের করেছেন অসম তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দুলু আহমেদ। তিনি বলেন, “এটিই এখন পর্যন্ত অসম থেকে তদন্ত চেয়ে দায়ের হওয়া একমাত্র এফআইআর। গরিমা শইকিয়া যদি তাঁর স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে একটি এফআইআর করেন- তবে ভাল হয়।”আজ জ়ুবিনের মৃত্যুর এক মাস পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে সোনাপুরে তাঁর শেষকৃত্যস্থলে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকালে গীতা পাঠ ও সংকীর্তনের পরে হয় সর্বধর্ম প্রার্থনা। বিকেলে শতাধিক বাঁশিবাদক সমবেতভাবে জ়ুবিনের গান বাজিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জ়ুবিনের পাড়া কাহিলিপাড়ায় আজ তাঁর পূর্ণাঙ্গ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়। লংকাতেও জ়ুবিনের মূর্তি উন্মোচন হয়েছে। স্ত্রী গরিমা লেখেন, “তুমি আছো, চিরকাল থাকবে। এ হল জন্ম-জন্মান্তরের আত্মার বন্ধন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)