তাঁর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০ বছর আগে। তবুও ব্যাঙ্কে চালু রয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্ট। তিনি বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ। দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। পটনা শহরের এগজিবিশন রোডের পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আজও চালু রয়েছে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির সেই অ্যাকাউন্টটি। ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, রাজেন্দ্র প্রসাদের বর্তমান অ্যাকাউন্ট নম্বর ০৩৮০০০০১০০০৩০৬৮৭। ১৯৬২ সালের ২৪ অক্টোবর, এটি শুরু হওয়ার সময়ে তার নম্বর ছিল ৩০৬৮। খাতার নম্বর পাল্টেছে। আজও সেই খাতায় ১০০ টাকা থেকে ৫০১ টাকা জমা হয় মাঝে মাঝেই। জমা করেন আম-জনতা।
পিএনবি-র সিনিয়র ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘‘এই অ্যাকাউন্টটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মারা যাওয়ার পরেও চালু রয়েছে। এখনও টাকা জমা হয় এই অ্যাকাউন্টে। দিন কয়েক আগেও টাকা জমা হয়েছে।’’ ব্যাঙ্কের পাশবুকে এখনও রাজেন্দ্রবাবুর ছবি রয়েছে। সেখানে পরিচয় হিসেবে লেখা রয়েছে, ‘ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি’। ঠিকানা—সদাকত আশ্রম, পটনা। রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নিয়ে রাজেন্দ্রবাবু পটনার সদাকত আশ্রমে চলে আসেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। বেঁচে থাকতে রাজেন্দ্রবাবু নিজে এই শাখায় এসে টাকা জমা করতেন।
সঞ্জয় কুমারের কথায়, বর্তমানে অ্যাকাউন্টে ৭৩৩০ টাকা রয়েছে। তবে রাজেন্দ্রবাবুর অ্যাকাউন্টে কারা টাকা জমা করেন সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও জমাকর্তাদের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি। তবে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমাদের গ্রাহকও হতে পারেন। কর্মচারিরাও হতে পারেন। আমরা এখানে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি ‘ডিসপ্লে’ করে রেখেছি। তা দেখে অনেকেই ওই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেন।’’
আসলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া রাজেন্দ্র প্রসাদের ওই অ্যাকাউন্টটিকে ডিপোজিটার এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাওয়্যারনেস ফান্ড (ডেফ অ্যাকাউন্ট) হিসেবে ঘোষণা করেছে। কী এই ডেফ অ্যাকাউন্ট! দশ বছরের বেশি সময় ধরে পরিচালিত না হওয়া অ্যাকাউন্টের জমা টাকা শিক্ষা ও সচেতনতার কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই অনুযায়ী রাজেন্দ্র প্রসাদের এই অ্যাকাউন্টটিকেও ওই তালিকায় ফেলা হয়েছে। এখানে জমা টাকা দেশের শিক্ষার উন্নয়নে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরকারি এই সিদ্ধান্তে আপত্তি নেই রাজেন্দ্র প্রসাদের পরিবারের সদস্যদেরও। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির নাতনি তারা সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের পরিবার ওই অ্যাকাউন্টের মালিকানার দাবি জানায়নি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এখন তাঁরা ওই টাকা যদি শিক্ষার উন্নতিতে ব্যবহার করে তবে তা আনন্দের কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy