Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাল্টা চাপ দিতে ভারতের সহায় ইজরায়েল

এই প্রথম ইজরায়েল সফরে যাচ্ছেন ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী। আগামিকাল সে দেশে পৌঁছবেন তিনি। বেশিরভাগ রাষ্ট্রনেতার মতো ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনকে একই বন্ধনীতে রাখার ধার ধারছেন না মোদী।

আগামিকাল ইজরায়েল পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।

আগামিকাল ইজরায়েল পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইজরায়েল সফরের প্রাক্কালে রাজধানীর কূটনীতিকদের মধ্যে চলছে একটি রসিকতা। বলা হচ্ছে, এত দিন ইজরায়েলের কাছ থেকে নেওয়া ভারতের নিরাপত্তা সহযোগিতা ছিল অনেকটা হিমশৈলের মতো! অর্থাৎ তার সামান্য অংশই ছিল সর্বসমক্ষে। বাকিটা গভীর জলে। এ বার গোটা বিশ্বের সামনে তাতে সিলমোহর লাগাতে চলেছে নয়াদিল্লি।

এই প্রথম ইজরায়েল সফরে যাচ্ছেন ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী। আগামিকাল সে দেশে পৌঁছবেন তিনি। বেশিরভাগ রাষ্ট্রনেতার মতো ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনকে একই বন্ধনীতে রাখার ধার ধারছেন না মোদী। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, দু’বছর আগে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের তেল আভিভ এবং রামাল্লা-য় যৌথ সফরের মাধ্যমে যেটুকু ভারসাম্য রাখার ছিল, তা করা হয়ে গিয়েছে। এ বার শুধুমাত্র ইজরায়েল সফরে গিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির বিষয়টিকে যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে গোপনীয়তার ঘেরাটোপ থেকে বের করে নিয়ে আসাটাই প্রধান লক্ষ্য। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, গত ১৮ বছর ধরেই ভারতীয় নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা কাঠামো বহুলাংশে ইজরায়েল নির্ভর। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় থেকে যার শুরু। সে সময় দ্রাস এবং বাতালিক সেক্টরে পাকিস্তানি সেনা ঢুকে পড়ার পরে তেল আভিভের কাছ থেকে প্রভূত সহায়তা নেয় ভারত। মুম্বই হামলা এবং সংসদ আক্রান্ত হওয়ার পরে ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছিল ভারত।

প্রধানমন্ত্রীর ইজরায়েল সফরে সাইবার প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, এই তিনটি ক্ষেত্রেই ভারত-ইজরায়েল সহযোগিতার কথা ঘোষণা করা হবে। মাঝারি পাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র, লঞ্চার, ড্রোন এবং যোগাযোগের প্রযুক্তি ভারতকে সরবরাহ করবে ইজরায়েলি সংস্থা। গোয়েন্দা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও করা হবে নতুন পদক্ষেপ।

প্রশ্ন উঠছে, এত বছরের গোপন সহযোগিতার পথ ছেড়ে হঠাৎ এখন কেন নিরাপত্তা সহযোগিতার দামামা বাজাতে চাইছে মোদী সরকার? কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, কৌশলগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত। গত তিন বছরে মোদীর বিদেশনীতিতে বন্ধুর চেয়ে শত্রু বেড়েছে বেশি। রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে চিন, পাকিস্তান। এমতাবস্থায় ইজরায়েলের মতো আধুনিক নিরাপত্তাক্ষমতায় বলীয়ান রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের বিজ্ঞাপনকে পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছে মোদী সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE