‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এ চিড় ধরেছিল। অভিযুক্ত চিকিৎসক উমর উন নবি এবং চিকিৎসক আদিল রাথরের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে ‘টেরর মডিউল’-এ ভাঙন ধরে। তা মেরামত করতে বিস্ফোরণের আগে হরিয়ানা থেকে কাশ্মীরের কাজিগুন্দে গিয়েছিলেন উমর। তদন্তকারীদের এক সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, উমরের সঙ্গে আদিলের মনোমালিন্য শুরু হয় ভাবধারা, টাকাপয়সা এবং হামলার কৌশল নিয়ে। ওই সূত্রের দাবি, উমর ছিলেন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। ফলে আইএস-এর কৌশলেই দিল্লিতে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। অন্য দিকে, আদিল আবার আল কায়দার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। ফলে দুই জঙ্গিগোষ্ঠীর দুই ভিন্ন ভাবধারায় অনুপ্রাণিত দুই চিকিৎসকই নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তার জেরে কাশ্মীরে গেলেও আদিলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যাননি উমর।
সূত্রের খবর, গত ১৮ অক্টোবর কাশ্মীরে যান উমর। সেখানে দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। কী ভাবে হামলা করতে হবে, তা নিয়েও বৈঠক হয়। তবে দলের সদস্যদের বেশির ভাগের সঙ্গেই উমরের মতপার্থক্য ছিল। উমর চেয়েছিলেন পুরো মডিউলকে তিনি নেতৃত্ব দেবেন। তাঁকে বিস্ফোরকের জন্য ২৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কাছে যখন সমস্ত খরচের হিসাব চাওয়া হয়, তখন তিনি দিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্টও হয়েছিলেন বাকিরা। তদন্তকারীদের ওই সূত্রে দাবি, উমরের কাছে যে ২৬ লক্ষ টাকা ছিল, তার মধ্যে দ’লক্ষ টাকা তাঁর নিজের এবং আট লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন চিকিৎসক আদিল। ফলে এখানেও আদিলের সঙ্গে তাঁর একটা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
ওই সূত্রের দাবি, উমর নিজেকে জঙ্গি বুরহান ওয়ানি এবং জ়াকির মুসার উত্তরসূরি ভাবতেন। ২০২৩ সাল থেকে তিনি আইইডি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। সূত্রের খবর, উমরের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন ‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এর আরও দুই সদস্য চিকিৎসক শাহীন এবং মুজ়াম্মিল। দিল্লি বিস্ফোরণের তিন সপ্তাহ আগে কাজিগুন্দে এই মডিউলের বৈঠক হয়। সেখানেও নিজের প্রভাব খাটাতে চেষ্টা করেছিলেন উমর। তাতে মডিউলের অন্য সদস্যেরা অসন্তুষ্ট হন। ফলে মডিউলের অন্দরে চিড় ধরতে শুরু করে। উমর সেটা বুঝতে পেরেই বিস্ফোরণের কয়েক দিন আগে আবার কাজিগুন্দে বৈঠক করে সেই চিড় মেরামতের কাজ করেন বলে তদন্তকারী সূত্রের খবর।