তীব্র বিতর্ক এবং মামলার পর পশ্চিমবঙ্গ-সহ বাকি রাজ্যগুলিতে এসআইআর শুরু করার আগে সর্বদলীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লির নির্বাচন সদন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকেরা (সিইও) সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক করবেন এসআইআর শুরু করার আগে।
কমিশন সূত্রের খবর, কার্যপদ্ধতি বা আইনি বিষয়গুলি সব সময়ে সকলের কাছে স্পষ্ট না থাকায়সমস্যা বেড়েছে। এই প্রক্রিয়ায় কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকা-দায়িত্ব প্রত্যেকের কাছে স্পষ্ট থাকা জরুরি। এই সব দিকসবিস্তারে জানাতে সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন হবে। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীরচৌধুরী সিইও সম্প্রতি দফতরে গিয়ে আগাম বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সিইও তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন, বিজ্ঞপ্তি জারি হলে প্রত্যেক দলের মতামত নিয়ে এসআইআরকার্যকর করা হবে।
কমিশনের খবর, এখনও দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও, আগামী মাসেই এ রাজ্যে এসআইআর-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে। সেই প্রক্রিয়ার বিধি এবং পদ্ধতি লিখিত ভাবে জানাবে কমিশন। তার পরেই সবক’টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকে বৈঠকে ডেকে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি, বিধি, পদ্ধতি সবিস্তারে জানানোহবে। বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও), ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) বা নির্বাচনী কাজে যুক্ত বাকি আধিকারিকদের কার কী ভূমিকা, বলে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক দলের বুথ লেভেল এজেন্টদের (বিএলএ) ভূমিকাও স্পষ্ট করেদেওয়া হবে।
কমিশন সূত্রের দাবি, বিএলও এবং বিএলএ-দের একসঙ্গেই কাজ করার কথা। কোথাও সংশোধন বা পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে অথবা ত্রুটি ধরা পড়লে তা যেন প্রক্রিয়া চলাকালীনই জানানো হয়, সেই বার্তা দেওয়া হবে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে ভোটারদের পাশাপাশি বিএলএ-রাও আপত্তি-পরামর্শ কমিশনকে জানাতে পারেন। তা-ও জানানো হবে।
ভোট বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য, বিহারের এসআইআর নিয়ে আইনি লড়াই হয়েছে। কমিশনের বিরুদ্ধে সরব রাহুল গান্ধী। তাঁর প্রতিটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান নিয়মিত স্পষ্ট করতে হচ্ছে কমিশনকে। তাই পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্যেও আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই প্রক্রিয়ার আইনি ক্রমপর্যায় স্থির করে রাখতে চাইছে কমিশন।
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, এসআইআর করতে দেওয়া হবে না, এই অবস্থান থেকে আপাতত সরলেও নাম বাদ গেলে নির্বাচন সদন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তৃণমূল। এই অবস্থায় বিহারের মতো সার্বিক প্রশাসনিক সহযোগিতা এখানে যে পাওয়া যাবে না, তা-ও আঁচ করছেন কমিশন-কর্তাদের একাংশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)