দিল্লির লালকেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণের আগে বেআইনি পথে ২০ লক্ষ টাকা ঢুকেছিল ‘ঘাতক’ উমর নবির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। যে সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে, তার চালকের আসনে ছিলেন উমর। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, তিনিই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের যোগও পাওয়া গিয়েছে।
উমরের ব্যাঙ্কের নথি ঘেঁটে দেখেছেন তদন্তকারীরা। হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে তিনি গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন দিল্লিতে। ফরিদাবাদের স্থানীয় বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই তিনি সেখান থেকে নগদ অর্থের বিনিময়ে প্রচুর পরিমাণে সার কিনেছিলেন। সারের পরিমাণ এবং নগদে খরচ মেটানোর বিষয়টি অনেকেরই চোখে লেগেছিল। সন্দেহ হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তাঁরা সে কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কী কাজে এই সার দরকার ছিল উমরের? বিস্ফোরক তৈরির সঙ্গে কি তার কোনও সম্পর্ক রয়েছে? খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারীদের মতে, উমর পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। বোমা তৈরিতেও ছিলেন পারদর্শী। দু’কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং পেট্রোলিয়াম ব্যবহৃত হয়েছিল দিল্লির বিস্ফেরণ ঘটাতে। তাঁর অ্যাকাউন্টে ২০ লক্ষ টাকার লেনদেনের তদন্তে নতুন মোড় এনেছে। তবে কি অন্য কেউ এই কাজের বরাত দিয়েছিলেন উমরকে? কাজের জন্য অগ্রিম হিসাবে ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন তিনি? আদৌ কি তবে লালকেল্লার সামনে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা ছিল না? একাধিক হাওয়ালা লেনদেনকারীকে ইতিমধ্যে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। ২০ লক্ষ টাকার উৎস খুঁজতে তারা মরিয়া।
গত ১০ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গা়ড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলার তকমা দিয়েছে নয়াদিল্লি। জানা গিয়েছে, ওই দিন ফরিদাবাদ থেকে এসে লালকেল্লার সামনের পার্কিং এলাকায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন উমর। সেই সময় কী করছিলেন, কী পরিকল্পনা ছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সূত্র খুঁজছে পুলিশ।
ঘটনার দিন সকালে ফরিদাবাদে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছিল ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক পদার্থ। এ ছাড়া, কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে অভিযান চালিয়ে মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছিল। গ্রেফতার করা হয়েছিল আট জনকে। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে অনেকেই উমরের মতো কাশ্মীরি চিকিৎসক। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।