অনলাইন প্রতারকদের সাহায্যের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের পাঁচ বাসিন্দার বিরুদ্ধে। ঘটনায় ঝাঁসির পাঁচ অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখা। পুলিশ সূত্রে খবর, টেলিগ্রামের মাধ্যমে অভিযুক্তেরা যোগাযোগ রাখত চিনা প্রতারক দলের সঙ্গে। ধৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ২০-২৪ বছরের মধ্যে। অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ আইটিআই স্নাতকও রয়েছেন।
অনলাইন প্রতারণার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায় প্রতারকেরা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে না। কারণ এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই তৃতীয় কোনও ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয় এ ক্ষেত্রে। এগুলিকে অনেকটা ভাড়ায় নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বলা যায়। ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর মাধ্যমে প্রতারণা বৃদ্ধি পেতেই এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও সতর্ক করা হয়।
দিল্লির এই ঘটনাটির ক্ষেত্রেও অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করে প্রতারকেরা। গত বছরের অগস্টে মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানকে প্রতারিত করে ১৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই মামলার তদন্তে উঠে আসে মহারাষ্ট্রেরই বাসিন্দা অপর এক ব্যক্তির নাম। বীরেন্দ্র রবীন্দ্রজি কাম্বলে নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ব্যবহার হয়েছিল প্রতারণার কাজে। অথচ বীরেন্দ্রের দাবি, তিনি এ সবের কিছু জানতেনই না। ঝাঁসির এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়ে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি খুলিয়েছিলেন বলে পুলিশকে জানান বীরেন্দ্র। সেই সূত্র ধরেই দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখার হাতে ধরা পড়েন ওই পাঁচ অভিযুক্ত— অভিষেক যাদব, ইমরান কুরেশি, আসাদ কুরেশি, দেব সাগর এবং জাভেদ।
আরও পড়ুন:
এদের প্রত্যেকের কাজও ভাগ করা ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযোগ, প্রতারকেদের কাছে এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি সরবরাহ করতেন অভিষেক। ইমরানের দায়িত্ব ছিল এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির দেখভাল করা। আসদ এবং জাভেদ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নতুন লোক খুঁজতেন। দেব ওই অ্যাকাউন্টগুলি খোলার কাজে সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ।
অনলাইন প্রতারণার জগতে ভাড়া নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের চল নতুন কিছু নয়। সাধারণত পুলিশ বা তদন্তকারী সংস্থার নজর এড়াতে প্রতারণা চক্রের মাথারা এই ধরনের ভাড়া নেওয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। সাধারণ মানুষের থেকেই ভাড়া নেওয়া হয় অ্যাকাউন্টগুলি। ধরে নেওয়া যাক, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি আসলে রয়েছে ‘ক’-এর নামে। কিন্তু সেটি ব্যবহার করছেন ‘খ’ নামের অন্য কোনও ব্যক্তি। কিছু শর্তের বিনিময়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রকৃত মালিকের থেকে সেগুলি ভাড়া নেয় প্রতারকেরা। ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত লেনদেন চালায় জালিয়াতেরা। পরিবর্তে প্রকৃত মালিককে নির্দিষ্ট কিছু পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়।