গ্রেফতার ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্র শেখর আজাদ। ছবি: টুইটার
দিল্লি পুলিশের হাত ছাড়িয়ে মিশে গিয়েছিলেন জনতার ভিড়ে। কিন্তু, পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলায় শেষ পর্যন্ত ছেদ টানতে হল ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদকে। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। গ্রেফতার করা হয়েছে আরও পনেরো জনকে। ‘মিশন চন্দ্রশেখর’ সফল হলেও, দিল্লি পুলিশকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর প্রতিবাদে ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়ারা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন জামা মসজিদ চত্বর থেকে প্রথমে আটক করা হয় চন্দ্রশেখরকে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া প্রতিবাদ মিছিল করা ও হিংসায় মদত দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার, জামা মসজিদ থেকে যন্তরমন্তর পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। গতকাল বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর জামা মসজিদেই আশ্রয় নিয়েছিলেন চন্দ্রশেখর। পুলিশের সঙ্গে কার্যত লুকোচুরি খেলা শুরু করেন তিনি।
গত কাল রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশের চোখ এড়িয়ে জামা মসজিদে ঢুকে পড়েছিলেন চন্দ্রশেখর। তিনি সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন তা আন্দাজ করেই, মসজিদের বাইরে ছিল পুলিশ। পুলিুশের চোখে ধুলো দিয়ে কী ভাবে মসজিদে ঢুকেছিলেন আজাদ? চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, টুপি ও শালে নিজেকে মুড়ে মসজিদে ঢুকে পড়েন তিনি। আজাদের দাবি, ‘‘আমার নাম চন্দ্রশেখর আজাদ। পুলিশ আমাদের বন্দি করে রাখতে পারবে না। আমি টুপি পরে ও শাল গায়ে দিয়ে মসজিদে ঢুকে পড়ি।’’
জামিয়া মিলিয়ায় জারি বিক্ষোভ। ছবি: টুইটার
আরও পড়ুন: আজও উত্তাল উত্তরপ্রদেশ, বিক্ষোভ-সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১১
সূত্রের খবর, চন্দ্র শেখরকে মসজিদের বাইরে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন দিল্লি পুলিশের অফিসাররা। অবশেষে এ দিন রাত ৩.১৫ নাগাদ নাটকের অবসান ঘটে। চন্দ্র শেখর মসজিদের বাইরে বেরিয়ে আসতে সম্মত হন। তার পর তাঁকে প্রথমে আটক এবং পরে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছেন ভীম আর্মির প্রধান। হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ খারিজ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আত্ম উৎসর্গ করতে হবে যাতে এই আইন প্রত্যাহার করতে সরকার বাধ্য হয়। আমরা হিংসাকে সমর্থন করি না। আমরা শুক্রবার থেকে জামা মসজিদের ভিতরেই বসেছিলাম। আমাদের সমর্থকরা হিংসায় বিশ্বাস করে না।’’ শুক্রবার ভীম আর্মির মিছিলের সময় হিংসার দায় দিল্লি পুলিশের ঘাড়েই চাপিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘টেনে দাড়ি ছিঁড়ে নেব, পুলিশ বলল আমাকে’
তিনি গ্রেফতার হলেও, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ যে চলবে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন আজাদ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফা দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও দিয়েছেন চন্দ্র শেখর। এ দিন আদালত তাঁকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয়। গত রবিবার পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তার পর থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ জারি রয়েছে সেখানে। শনিবার ওই বিক্ষোভ সপ্তম দিনে পড়ল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy