এ ভাবেই স্কুল সামলান উমাদেবী।
পক্ষাঘাতে শরীরের প্রায় পুরোটাই অসাড়। শুধু মাথা আর হাত দু’টো এখনও স্বাভাবিক, সচল রয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই জীবনের গত দশটা বছর কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু পক্ষাঘাতে শরীর অকেজো করে দিলেও, ছুঁতে পারেনি তাঁর মনকে। একটুও নষ্ট করতে পারেনি তাঁর মানসিক শক্তিকে।
সেই মানসিক শক্তিকে সম্বল করেই গত এক দশক ধরেই হাসপাতালের চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি থেকেও একটা স্কুল চালাচ্ছেন ৬৪ বছরের উমা শর্মা।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের ন্যাশনাল পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল উমাদেবী। গত দশ বছর ধরে একটা ট্যাবের সাহায্যে স্কুলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত ক্লাস নেন তিনি।
আরও পড়ুন: তারুরের উদ্যোগে ফের স্কুলে দুই পড়ুয়া
স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালের একটি ঘরের বাইরে তেমন একটা বেরোন না তিনি। তবে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাঁর অভাব কোনও দিনই বোধ করেনি। কারণ, তিনি সবসময়ই স্কুলের সঙ্গে রয়েছেন, ঠিক যেমন দশ বছর আগে ছিলেন।
২৭ বছর আগে উমাদেবীর স্বামী মারা যান। এর কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর দুই সন্তানেরও মৃত্যু হয়। কিন্তু একের পর এক আঘাতেও ভেঙে পড়েননি তিনি। স্কুলের পর একাকিত্ব কাটাতে দুঃস্থ শিশুদের জন্য একটি স্কুলও চালু করেন তিনি। যদিও নানা সমস্যার জেরে তা বছর চারেকের বেশি চালাতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: রাজার জন্মদিনে কেক কাটলেন মন্ত্রী
আজও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন উমাদেবী। দৈনন্দিন যেটুকু কাজ তাঁর না করলেই নয়, সেটুকু করতেও তাঁকে নির্ভর করতে হয় অন্যের উপর। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করার জন্য একজন রয়েছেন বটে, কিন্তু তাঁর বেঁচে থাকার শক্তি তিনি আজও সংগ্রহ করেন তাঁর স্কুলের কচিকাঁচাদের থেকেই। এই স্কুলের এক প্রশাসক সুরেন্দ্র চৌহান একটি সাক্ষাত্কারে বলেন, “তাঁর অভাব তিনি কখনওই আমাদের বুঝতে দেননি। তিনি সব সময় আমাদের সঙ্গেই আছেন। উমাদেবী আমাদের সকলকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণীত করে চলেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy